সোহানুর রহমান সোহান বাংলাদেশ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জঙ্গলবাড়ি গ্রামে অবস্থিত বাংলার বারোভুঁইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁ’রজঙ্গলবাড়ি দুর্গ ২য় রাজধানী ছিল জঙ্গলবাড়ি দুর্গ। জঙ্গলবাড়ি দুর্গ কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলাধীন জঙ্গলবাড়ি গ্রামে অবস্থিত। ঈশা খাঁ ১৫৮৫ সালে তৎকালীন কোচ রাজা লক্ষণ হাজরা ও রাম হাজরাকে পরাজিত করে জঙ্গলবাড়ি দুর্গ দখল করেন। দুর্গটিতে ‘প্রাসাদ প্রাচীর’ নামক প্রাচীর দিয়ে উত্তর দক্ষিণে বিভক্ত দুটি চত্ত¡র রয়েছে। দক্ষিণ দিকে একটি তোরণ রয়েছে। তোরণটির সামনের দিকে ‘করাচি’ নামে একটি পূর্বমুখী একতলা ভবন রয়েছে। তোরণের পিছনে ‘অন্দর মহল’ নামে দক্ষিণমুখী একতলা একটি ভবন রয়েছে। বাড়ির সামনে তাঁর সময়ের খনন করা একটি দিঘী রয়েছে। তার পাশেই রয়েছে একটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। ধারণা করা হয় ঈশা খাঁ’ই মসজিদটি নির্মাণ করেন।
২০০৫ সালের ১২ জুন দুর্গের ভিতরের দরবার গৃহটি সংস্কার করে ‘ঈশা খাঁ’ স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার স্থাপন করা হয়। বর্তমানে জঙ্গলবাড়ি দুর্গ একটি দৃষ্টিনন্দন প্রততাত্তিক স্থাপনা।উল্লেখ তিনি ১৫২৯ সালের ১৮ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সোলায়মান খাঁ। তিনি ছিলেন আফগানিস্তানের সোলায়মান পার্বত্য অঞ্চলের এক আফগান দলপতির বংশধর। নুসরত শাহ এর রাজত্বকালে তিনি বাংলায় বসতি স্থাপন করেন এবং স্বীয় প্রচেষ্টায় ভাটি এলাকার বৃহত্তর ঢাকার ও ময়মনসিংহ জেলার উত্তর-পূর্ব অংশ নিয়ে এক স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
সোলায়মান খাঁ অন্ততপক্ষে দুবার ইসলাম শাহ শুরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং ১৫৪৮ সালে নিহত হন। ঈশা খাঁর বয়স তখন ১৯ বছর। পিতার মৃত্যুর পর ঈশা খাঁর পিতৃব্য কুতুবউদ্দীন তাকে লালন পালন করেন। তখন বাংলার জমিদারগণ মোঘল ও ইংরেজদের কবল থেকে বাংলাকে রক্ষা করার জন্য তাদের গোয়েন্দাদের মাধ্যমে ঈশা খাঁকে আফগানিস্তানে সংবাদ দিয়েছিলেন।
ঈশা খাঁ তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আফগানিস্থান হতে ১৪০০ (চৌদ্দশ’) অশ্বারোহী, ২১টি নৌবিহার ও পর্যাপ্ত গোলা বারুদ নিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে এসে পৌঁছান। ত্রিপুরা রাজ্য থেকে কিশোরগঞ্জের জঙ্গলবাড়ি দূর্গ দখল করে পরবর্তীতে সোনারগাঁও দূর্গ দখল করেন।