আগরতলা: ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আজ বলেছেন যে সম্প্রতি রায়পুরে অনুষ্ঠিত ডিজিপি এবং আইজিপি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেটা ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ৭০% এর অধিক প্রয়োগ করা হয়েছে l

আজ আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে ডিজিএসপি/আইজিএসপি সম্মেলন-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত রাজ্য-স্তরের সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজকের এই কার্যক্রম রায়পুরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ডিজিএসপি এবং আইজিএসপি সম্মেলনের ফলোআপ কার্যক্রম। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সমস্ত ডিজি ও আইজিগণ উপস্থিত ছিলেন। সেই সম্মেলনে আমাদের দেশ এবং কিছু নির্দিষ্ট রাজ্য সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়েছিল। যেহেতু আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভিন্ন হুমকির সম্মুখীন এবং বিভিন্ন উপায়ে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, কীভাবে এসব হচ্ছে, আন্দোলনের নামে পেছন থেকে দেখা যায় কিছু বিদেশী দেশ থেকে এবং নির্দিষ্ট কিছু এনজিও থেকে অর্থায়ন করা হচ্ছে, লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে সেসব বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। আর পুলিশ হচ্ছে আমাদের ফ্রন্ট রানার।

সংবাদ মাধ্যমকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন পুলিশ শুধু অপরাধই মোকাবেলা করছে না, এর পাশাপাশি দুর্ঘটনা, বিপর্যয়, গণ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও কাজ করছে। পুলিশই সবার আগে পৌঁছায়। মানুষ শান্তি চায়। অপারেশন সিন্দুরের পরে অনেক বিদেশী দেশ নাক গলানোর জন্য এসেছে, যেখানে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, আমাদের পরামর্শের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন পার্টনারের। আমাদের দেশে, আমাদের সবকিছু আছে। আমরা কাউকে পরামর্শ দেওয়ার দরকার পড়ে না। ২০১৪ এর আগে ভারতের পরিস্থিতি অনুকূলে ছিল না। চারিদিকে একটা অশান্তির বাতাবরণ ছিল। পাকিস্তান ও চীন দ্বারা বেষ্টিত হয়ে ভারতকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেক বিএসএফ, সিআরপি এবং স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শহীদ হয়েছেন।

ডাঃ সাহা বলেন, এবার প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছেন, এরমধ্যে ত্রিপুরায় ইতিমধ্যে ৭০% এরও অধিক বাস্তবায়িত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা যে সঠিক পথে রয়েছি—এটি প্রমাণিত হয়েছে। তবুও, আমাদের আরও শক্তিশালী হতে হবে। আজ আমি সমস্ত ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের বলেছি যে প্রধানমন্ত্রী মোদি যদি একটি নতুন ভারতের কথা বলছেন, তাহলে আমরা কেন একটি নতুন ত্রিপুরা গঠন করতে পারি না? যেহেতু পুলিশ ফ্রন্ট রানার, তাই তাদের সাহায্য অপরিহার্য। পুলিশকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশিকা পড়তে হবে। আমি আরও বলেছি যে গণতন্ত্র বজায় রাখতে পারলে আইন-শৃঙ্খলা শক্তিশালী হবে। পুলিশকে মানুষের জন্য হতে হবে। ইউনিফর্ম একটি অলঙ্কার এবং অফিসারদের এটি নিয়ে গর্ব করা উচিত। তাদের মুখের অভিব্যক্তিও জনগণের পক্ষে হওয়া উচিত।

আমি ত্রিপুরাকে একটি মডেল এবং আরও উন্নত আইনশৃঙ্খলার উদাহরণ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আহ্বান করেছি এবং ত্রিপুরা পুলিশের সেই সক্ষমতা রয়েছে। আমি খুব কমই পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করি এবং সরকারও তা করে না, যা ত্রিপুরাকে ভারতের একটি মডেল রাজ্যে পরিণত করার একটি সুবর্ণ সুযোগ। এই কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *