আগরতলা।।শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে শিক্ষক দিবসে কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পুরস্কার প্রদান করা হবে। আগামী বছর তাঁর জন্মদিনে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে সামাজিক, রাজনৈতিক, দেশ সেবা ও প্রশাসনিক কাজে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি অ্যাক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

আগরতলা টাউন হল প্রাঙ্গণে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির প্রতিকৃতি স্থাপন করা হবে। ড. মুখার্জিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজকের দিনে টাউন হল তাঁর নামে উৎসর্গ করা হল। আজ আগরতলার মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে ভারত কেশরী ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির ১২৫ তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে এই উল্লেখযোগ্য ঘোষণা দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আমরা প্রতি বছর আজকের দিনটি সরকারি ও বিভিন্ন স্তরে উদযাপন করি। আজ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি। তাঁর চিন্তা চেতনা, নীতি আদর্শ আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তাই ড. মুখার্জির জীবন দর্শন সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। আগামীদিনেও তিনি যেসব কাজ মানুষের জন্য করে গিয়েছেন সেটাকে আরো জানতে হবে, বুঝতে হবে। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতবর্ষের সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে একটা পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের মহান ব্যক্তিদের জীবন দর্শন আমাদের সামনে তুলে ধরছেন তিনি।

আজ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মদিন সরকারিভাবে উদযাপন করার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে আমাদের ছেলেমেয়েদের এসম্পর্কে অবগত করা। দেশের জন্য তিনি কি কাজ করেছেন সেবিষয়ে তাদেরকে জানানো। আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন যে কথা বলছেন সেটা আগেই ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বলেছিলেন। বিশেষ করে সমাজ সংস্কার করার বিষয় সম্পর্কে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে আমাদের অর্থনীতির বুনিয়াদ, সামাজিক অবস্থানের রূপরেখা কিছুই ছিল না। দেশ একটা মিশ্র ধারনা নিয়ে চলছিল। আর দেশের উন্নতি সেভাবে এগিয়ে যেতে পারে না। আমাদের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী বলছেন সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস, সবকা বিশ্বাস এর কথা। আমাদের ভারতবর্ষে অনেক মহামানব জন্মগ্রহণ করেছেন। তাই তাঁদের জন্মদিন, বলিদান দিবস কিংবা প্রয়াণ দিবস আমরা পালন করি। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি অখন্ড ভারতও সমাজ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র নির্মাণের যে চিন্তাভাবনা করেছেন তাকে পাথেয় করে দেশ ও রাজ্য এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আমাদের এগিয়ে যাওয়ার দিশা দেখিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নির্দেশিত দিশায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে কাজ করছেন। দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করার জন্য কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন সামাজিক সংস্কার করছেন তিনি। মুসলিম সমাজে মহিলাদের তিন তালাক প্রথা বিলোপ করেছেন। আর কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক রাজ্য সরকারও কাজ করছে। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নীতি ও আদর্শকে পাথেয় করে ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশে একের পর এক পরিবর্তন ঘটছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিল্প, শিক্ষা, কৃষি সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। অর্থনীতির দিক থেকে ১১তম স্থান থেকে উঠে এসে ভারত এখন চতুর্থ স্থানে চলে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে ভারতকে এখন সম্মানের নজরে দেখে গোটা বিশ্ব।

মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি জনমুখী প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছে আমাদের সরকার। এজন্য রাজ্যে প্রতি ঘরে সুশাসন কার্যক্রম করা হয়েছে। এর অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের স্কিমগুলি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। ত্রিপুরায় প্রত্যেকটি জনজাতি গোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। তাদের ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিন ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির রাজ্যভিত্তিক জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি ঘোষণা দেন এখন থেকে আগরতলা টাউন হলের নামকরণ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নামে হবে। সেই সঙ্গে টাউন হলের সামনে ড. মুখার্জির প্রতিকৃতি স্থাপন করা হবে। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক যেসমস্ত ব্যক্তিগণ বিশেষ বিশেষ কাজে অবদান রেখেছেন তাদের আগামী শিক্ষক দিবসে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নামে সম্মাননা প্রদান করবে শিক্ষা দপ্তর।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, বিধায়ক মীনা রাণী সরকার, রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *