আগরতলা: ত্রিপুরা থেকে নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির চিন্তা ভাবনা করছে তবে এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।
আজ নর্থ ইস্ট পাওয়ার সিস্টেম ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের অধীনে গোকুলনগর রাস্তারমাথা স্পোর্টস গ্রাউন্ডে ১৩২ কেভি গোকুলনগর সাব-স্টেশনের উদ্বোধন করে বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ আজ এই কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, এই সাব-স্টেশন নির্মাণে মোট ৪৩.৯৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হল নাগরিকদের নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশালগড়, অফিস টিলা, সেন্ট্রাল জেল, গোলাঘাটি, মধুপুর, সেকেরকোট, ফুলতলি, বিক্রমনগর, কমলাসাগরসহ প্রায় ৪৮,৭৪০টি পরিবার উপকৃত হবে।
মন্ত্রী বলেন ত্রিপুরায় আমরা গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। তবে গ্যাসের সরবরাহ ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। আগে রাজ্যে ৭ লক্ষ ২১ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক ছিলেন, আর বর্তমান সরকার আসার পর সাত বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লক্ষ ৩৮ হাজারে। আধুনিকায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে। আধুনিকতার পথে এগোতে হবে, তাহলেই আমরা উন্নতির দিকে যাবো, আর আমাদের সরকার সেই দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও জানান, বর্তমান সরকারের আগে রাজ্যে ছিল ১২টি ১৩২ কেভি সাব-স্টেশন, বর্তমানে তা বেড়ে ২১-এ দাঁড়িয়েছে এবং আরও ২টির কাজ চলছে। আগে ১৩২ কেভি লাইনের দৈর্ঘ্য ছিল ৪৮৫ কিমি, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৯৮৬ কিমি, আরও ১০২ সার্কিট কিমির কাজ চলছে।
২০১৮ সালের আগে ৪৪টি ৩৩ কেভি সাব-স্টেশন ছিল, এখন সাত বছরে ৭৫টি স্থাপন হয়েছে এবং আরও ১৮টি নির্মাণাধীন। আগে যেখানে মাত্র ৯৫ কিমি আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল ছিল, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭১ কিমিতে।
মন্ত্রী জানান গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় রুখিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র যেখানে ৬৩ মেগাওয়াট উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে, সেখানে এখন মাত্র ১৯ মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে। গ্যাসের সীমিত সরবরাহের মধ্যেও উৎপাদন দ্বিগুণ করতে আমরা নতুন প্রযুক্তি আনছি। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ৯৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে রুখিয়ায় কম্বাইনড সাইকেল গ্যাস টারবাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে।
তিনি আরও জানান ছামণুতে ৮০০ মেগাওয়াটের পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং তার ডিপিআর কাজ চলছে। সূর্যমণিনগরে একটি ৪০০ কেভি সাব-স্টেশন স্থাপন করা হবে। আমরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছি, এবার নেপালেও রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। আজ দিল্লিতে এই বিষয়ে বৈঠক হচ্ছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি সব সরকারি দফতরকে ছাদে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে। অনুষ্ঠানে সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, বিধায়ক অন্তরা সরকার দেব, বিশালগড় পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন আতশি দাস, টিপিটিএল-এর জিএম রঞ্জন দেববর্মা এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।