আগরতলা : জিএসটি ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশ ও রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক শক্তিশালী হচ্ছে। জিএসটি সংস্কারের মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণও উন্নত মানের হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের জীবন মান উন্নত করতে এই সংস্কার একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

আজ আগরতলার মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে জিএসটি থেকে পরবর্তী প্রজন্মের সুবিধা সম্পর্কে আয়োজিত কর্মশালায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর ওয়ান ন্যাশন ওয়ান ট্যাক্স করে দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যেটা আগে কেউ কখনো ভাবতে পারেন নি। আমরা আগে বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স দেখেছি। যেমন – এক্সাইজ ডিউটি, কাস্টমস ডিউটি, সার্ভিস ট্যাক্স, ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স, সেন্ট্রাল স্টেট ট্যাক্স, লাক্সারি ট্যাক্স, এন্টারটেইনমেন্ট ট্যাক্স ইত্যাদি। সেই জায়গায় দেশের মানুষকে সঠিক নির্দেশনা দেখাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

তাঁর মার্গদর্শনে সারা দেশে জিএসটি চালু হয়েছে। আর এই ট্যাক্সের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ট্যাক্স সিস্টেম চালু হওয়াতে দেশের অর্থনীতি ১১তম স্থান থেকে চতুর্থ স্থানে চলে এসেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত বিকশিত ভারত ২০৪৭। এই লক্ষ্যে আমরাও বিকশিত ত্রিপুরা ২০৪৭ এর জন্য রোডম্যাপ তৈরি করেছি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিএসটি’র ক্ষেত্রে আগে ৫টি পর্যায় ছিল। যা এখন দুই পর্যায়ে যথাক্রমে ৫% ও ১৮% এ নিয়ে আসা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের অনেক সুবিধা হয়েছে। আর এই জিএসটির বিষয়টা একটা মানুষ বান্ধব সিদ্ধান্ত। মূলত সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে এটা করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ তাদের মাসিক খরচে অন্তত ৪% সুবিধা পাবেন। আগে পণ্যবাহী গাড়িগুলিকে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন টোল বা নাকা পয়েন্টে দাঁড়াতে হতো। কিন্তু এখন তারা সরাসরি গন্তব্যে চলে আসতে পারছে। আগে নাকাগুলি দুর্নীতির পয়েন্ট হিসেবে জানতো মানুষ। এখন এসব পয়েন্টে দাঁড়াতে না হওয়ায় পণ্যবাহী গাড়িগুলির গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় ৩৩% কমে গিয়েছে। এতে জ্বালানি খরচও অনেকটা বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশ ও রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক শক্তিশালী হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা আরো বলেন, জিএসটি সংস্কারের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ খুবই উন্নত মানের হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন। এজন্য তিনি বিকশিত ভারত ২০৪৭ এর কথা বলছেন। এখন আমাদের রাজস্ব সংগ্রহের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। জাতীয় সড়ক হচ্ছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে উন্নত হচ্ছে দেশ। স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে দেশেই এখন বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, হেলিকপ্টার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।

তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিএসটির নয়া সংস্কারে দুধ, ছানা, রুটি ইত্যাদি করমুক্ত করা হয়েছে। সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, সাইকেল সহ বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্য মাত্র ৫% করা হয়েছে। একইভাবে নোনতা, সস, পাস্তা, নুডলস, চকলেট, মাখন, ঘি ১২% বা ১৮% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ বা মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক সুবিধা হয়েছে। এর সঙ্গে জীবন বীমা ও স্বাস্থ্য বীমাকেও জিএসটি মুক্ত করা হয়েছে। জিএসটি কমার কারণে জীবনদায়ী ঔষধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ডায়াগনস্টিক কিড এবং চিকিৎসা যন্ত্রপাতি শূন্য কিংবা ৫% হয়েছে। এর পাশাপাশি কৃষকদের ট্রাক্টর, ধান কাটার যন্ত্র এখন মাত্র ৫% করের আওতায় আসবে। সিমেন্ট ক্রয়ের ক্ষেত্রে ২৮% থেকে কমিয়ে ১৮% করা হয়েছে। এতে বিল্ডিং তৈরির ক্ষেত্রে কিছুটা সাশ্রয় হবে। ডাঃ সাহা আরো জানান, সাধারণ নাগরিকদের জীবন মান উন্নত করতে এই জিএসটি একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায় সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *