আগরতলা : এমজিএনরেগা প্রকল্পের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়াল। রবিবার আগরতলা কংগ্রেস ভবন থেকে শুরু হয় এক বিক্ষোভ কর্মসূচি। বিক্ষোভ শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল দাহ করেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা।

এখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন , দলের মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পিতভাবে ঐতিহাসিক সামাজিক প্রকল্পগুলোর নাম বদলে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চাইছে। তাদের দাবি, গ্রামীণ কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত এমজিএনরেগা শুধু একটি প্রকল্প নয়, এটি গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ড—যা লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বলেন , “নামের রাজনীতির মাধ্যমে সরকার প্রকৃত ইস্যু—বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি ও গ্রামীণ সংকট—থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে।” কংগ্রেস নেতৃত্ব আরও অভিযোগ তোলে যে, কেন্দ্র সরকার একদিকে কর্মসংস্থান প্রকল্পের বরাদ্দ কমাচ্ছে, অন্যদিকে নাম বদলের নাটক করে জনস্বার্থকে আড়াল করছে। এমজিএনরেগার নাম পরিবর্তন আসলে নেহরু-গান্ধী পরিবারের অবদান মুছে ফেলার একটি রাজনৈতিক প্রচেষ্টা।

তারা স্পষ্ট করে দেন, “এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে রাজ্যজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে কংগ্রেস।” এম জি এন রেগা— কেবল একটি প্রকল্পের নাম নয়, এটি গ্রামীণ ভারতের জীবনরক্ষাকারী শ্বাসনালী।

অথচ আজ সেই প্রকল্পের নাম মুছে ফেলার উদ্যোগকে ঘিরে আগরতলায় কংগ্রেস ভবনের সামনে রাজপথে নেমে এল প্রতিবাদের আগুন। নাম বদলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়ে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা আয়োজন করলেন বিক্ষোভ কর্মসূচি, যার পরিসমাপ্তি ঘটল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল দাহের মধ্য দিয়ে। প্রশ্নটা সোজা— নাম বদলালেই কি ইতিহাস বদলে যায়? নাকি এই সরকারের রাজনৈতিক দর্শনই হল— আগের সব কিছুকে অস্বীকার করে নতুন করে “ব্র্যান্ডিং” করা?

এম জি এন রেগা গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের জন্য ১০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা দিয়েছিল— খাদ্য, শিক্ষা ও ন্যূনতম মর্যাদার অধিকার। আজ সেই প্রকল্পকে দুর্বল করে, নাম বদলের ছুতোয় তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মুছে ফেলার চেষ্টাই কি আসল লক্ষ্য? এদিন কুশপুতুল দাহকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ভবন চত্বরে কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থান নেয়। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এমজিএনরেগার নাম পরিবর্তন নিয়ে এই বিতর্ক রাজ্য রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল। গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ককে ঘিরে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়েই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *