আগরতলা : রাজ্যকে নেশামুক্ত ত্রিপুরা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের নির্দেশে কলমচৌড়া থানা, ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর) এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর যৌথ উদ্যোগে বুধবার একাধিক গাঁজা বিরোধী বিশেষ অভিযান চালানো হয়।
গোপন সূত্রে পাওয়া নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে কলমচৌড়া থানা এলাকার তিনটি পৃথক স্থানে এই অভিযান সংগঠিত হয়। এই বিশেষ অভিযানের নেতৃত্ব দেন কলমচৌড়া থানার ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ ইন্সপেক্টর অরূপ দেববর্মা। বুধবার সকাল প্রায় ৭টা নাগাদ প্রথম অভিযানটি চালানো হয় মানিক্যনগর স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায়। সেখানে বিস্তীর্ণ জমিতে বেআইনিভাবে চাষ করা গাঁজা গাছ চিহ্নিত করে তা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়। এরপর দ্বিতীয় অভিযানটি পরিচালিত হয় রুখিয়া এবং এনজিসি সংলগ্ন সরকারি বনভূমিতে।
প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় গোপনে গাঁজা চাষ চলছিল বলে পুলিশের দাবি। তৃতীয় এবং শেষ অভিযানটি চালানো হয় উত্তর কলমচৌড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পাশানিয়া এলাকায়, যেখানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা গাছ উদ্ধার করে সেগুলি মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই তিনটি অভিযানে মোট প্রায় দেড় লক্ষাধিক গাঁজা গাছ ধ্বংস করা হয়েছে, যা জেলার নেশা কারবারিদের জন্য এক বড়সড় ধাক্কা বলে মনে করছে প্রশাসন।
এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সাব-ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ দেববর্মা এবং সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জিত দেববর্মা। পাশাপাশি অভিযানে অংশ নেয় ১৫ ব্যাটালিয়ন টিএসআরের মহিলা বাহিনী সহ ৭ এবং ৯ নম্বর টিএসআর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা। অভিযানে বিএসএফের সহযোগিতাও উল্লেখযোগ্য বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এ বিষয়ে কলমচৌড়া থানার ওসি ইন্সপেক্টর অরূপ দেববর্মা বলেন, “নেশা কারবারের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আগামী দিনেও এই ধরনের গাঁজা বিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তবর্তী ও বনাঞ্চল এলাকাগুলিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের অবৈধ চাষে যুক্ত হতে না পারে। নেশা মুক্ত সমাজ গঠনে সাধারণ মানুষের সহযোগিতাও অপরিহার্য বলে মত প্রশাসনের। এই অভিযানের ফলে কলমচৌড়া ও আশপাশের এলাকায় নেশা কারবারের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোর বার্তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
