আগরতলা, ৮ নভেম্বর: রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে বর্তমান সরকার। শুধুমাত্র জিবি কিংবা আইজিএম হাসপাতাল নয়, রাজ্যের সমস্ত জেলা ও মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলিতেও পরিকাঠামো এবং পরিষেবা উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আজ হাঁপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের বিবেকানন্দ অডিটরিয়ামে আয়োজিত অ্যাসোসিয়েশন অফ ফিজিশিয়ান অফ ইন্ডিয়া (API) এর ত্রিপুরা শাখার ২৫ তম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। দুদিন ব্যাপী এই বার্ষিক সম্মেলনে রাজ্যের স্বনামধন্য চিকিৎসক ডাঃ বিজয় পাল, ডাঃ পীযূষ কুমার দত্ত, ডাঃ তুষার কান্তি দে এবং ডাঃ গৌতম রায় চৌধুরীকে লাইফ টাইম এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেনা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনগুলির মাধ্যমে চিকিৎসকরা নিজেদের মধ্যে তাদের অভিজ্ঞতার আদান প্রদান করতে পারেন, যা চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই ধরনের সম্মেলনে শুধু আলাপচারিতাই হবে না, সমাজের সর্বাঙ্গীন বিকাশে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। রাজ্যে বর্তমানে তিনটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। যেখানে প্রায় ৪০০ এমবিবিএস আসন রয়েছে। ডেন্টাল কলেজে আসন রয়েছে ৬৩টি। ইতিমধ্যে আগরতলার অদূরে বোধজংনগরে বেসরকারি সিজা হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। তাছাড়া একটি মেডিকেল কলেজ এখানে নির্মাণ করা হবে।
চিকিৎসকদের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ইতিমধ্যে রাজ্যে পাঁচটি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট অপারেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। এজিএমসি ও জিপিপি হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি এবং রোটারি ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে ১০ টাকার বিনিময়ে রোগীর সাথে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের খাদ্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যের চিকিৎসক সংকট দূর করার জন্য ইতিমধ্যে ডাক্তার নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়াও রাজ্যে বিএসসি নার্সিং, এ এন এম, জি এন এম, ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি পড়ার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সর্ব সুবিধা থাকা সত্বেও রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবিপিতে পরিচালনগত ত্রুটির জন্য মাঝেমধ্যে কিছুটা সমস্যা হয়ে থাকে। তাই এই হাসপাতালের রোগী পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ের উন্নতি সাধনে ইতিমধ্যেই দিল্লি এইমস এর সাথে রাজ্য সরকারের একটি মৌ সাক্ষরিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ও মুখ্যমন্ত্রীর জন আরোগ্য যোজনায় প্রায় ২৬ কোটি টাকা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য কল্যাণে ব্যয় করা হয়েছে। রাজ্যে এখন প্রায় ১,১০০ এর উপর হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার রয়েছে। আইএলএস সংলগ্ন ফাঁকা জমিতে আগামীদিনে একটি অত্যাধুনিক চক্ষু হাসপাতাল গড়ে তোলার কাজ শুরু হবে। বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্য মাথাপিছু আয় এবং জিএসডিপিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বশ্রেষ্ঠ রাজ্য। সম্মেলনে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশন অফ ফিজিশিয়ান অফ ইন্ডিয়ার জাতীয় সভাপতি প্রফেসর ডাঃ জ্যোতির্ময় পাল, ত্রিপুরা শাখার সভাপতি প্রফেসর ডাঃ অরিন্দম দত্ত, সম্পাদক ডাঃ সৌমেন চৌধুরী, এজিএমসির ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডাঃ তপন মজুমদার, মেডিকেল এডুকেশন এর অধিকর্তা প্রফেসর ডাঃ এইচ পি শর্মা, এপিআই এর সদস্য প্রফেসর ডাঃ প্রদীপ ভৌমিক সহ অন্যান্য বিশিষ্ট চিকিৎসকগণ।
