আগরতলা, ১৫ সেপ্টেম্বর: দেশ ও রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারদের। পরিকাঠামো উন্নয়নেও ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা খুবই উল্লেখযোগ্য। এর পাশাপাশি ইস্টার্ন জোনের মধ্যে ত্রিপুরায় প্রথম বারের মতো ডাটা সেন্টার করছে এয়ারটেল।

                                     আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে ৫৮তম ইঞ্জিনিয়ার দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
                               অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তথা পূর্তমন্ত্রী ডাঃ সাহা ইঞ্জিনিয়ার দিবস উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ভারতরত্ন ড. এম বিশ্বেশ্বরাইয়ার যুগান্তকারী অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ডে হিসেবে উদযাপন করা হয়। পানীয় জল সম্পদ ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন তিনি। এজন্য তাঁকে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল। আজ ইঞ্জিনিয়ার্স ডে উপলক্ষে আমি তাঁকে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই। আমাদের ত্রিপুরায় বিভিন্ন ধরণের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ত্রিপুরা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি (ট্রিপল আইটি), ইকফাই ইউনিভার্সিটি, টেকনো ইন্ডিয়া সহ বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ চালু রয়েছে রাজ্যে। 
                             মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ ও রাজ্যকে উন্নত করতে হলে ইঞ্জিনিয়ারদের অবদান অনস্বীকার্য। তাদের ছাড়া কোন অবস্থায় সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার বলছেন বিকশিত ভারত ২০৪৭। এসম্পর্কে একটা রোড ম্যাপ আমাদের সামনে রেখেছেন তিনি। এই লক্ষ্যে আমরাও বিকশিত ত্রিপুরা ২০৪৭ এর দিশায় রোড ম্যাপ এর সূচনা করেছি। এক্ষেত্রে সারা দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। পরিকাঠামো উন্নয়ন না হলে রাজ্যও উন্নত হবে না। প্রধানমন্ত্রীও পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এবারের বাজেটে পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে হলে ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন হয়। সমাজে ইঞ্জিনিয়ারগণ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিল্ডিংয়ের ডিজাইন থেকে শুরু করে ব্রিজ, রাস্তাঘাট সহ সমস্ত ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়নে ইঞ্জিনিয়ারদের দরকার হয়। 
                                   বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ইঞ্জিনিয়ারদের আরো দায়িত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। কাজ রূপায়নের ক্ষেত্রে যাতে নির্ভুলতা বজায় থাকে সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে আজ ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্বও অনেক বেড়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনিককে ব্যবহার করে ক্যাবিনেট থেকে শুরু করে জেলা, মহকুমা, ব্লক, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত পর্যন্ত ই-অফিস চালু হয়েছে রাজ্যে। ইঞ্জিনিয়ারিং আর্টকে ব্যবহার করে আমাদের রাজ্যে অনেক কাজ রূপায়িত হচ্ছে। 
                                 মুখ্যমন্ত্রী জানান, আমাদের রাজ্যে এমএসএমই'র মধ্যে প্রায় ২.১ লক্ষ এন্টারপ্রেনার রয়েছেন। ত্রিপুরায় এয়ারটেলের ডাটা সেন্টার হচ্ছে। এজন্য আমরা মৌ করে জমি দিয়েছি। ইস্টার্ন জোনের মধ্যে ত্রিপুরায় প্রথম বারের মতো ডাটা সেন্টার করতে যাচ্ছে এয়ারটেল। তিনি বলেন, ড্রোন ও এআইকে ব্যবহার করে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কাজ করা যায়। আজ ইঞ্জিনিয়ার দিবস উপলক্ষে আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত যে আমরা ত্রিপুরাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। গুজরাটে বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি দ্য স্ট্যাচু অব ইউনিটি ইঞ্জিনিয়ারদের জন্যই সম্ভব হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের চেনাব ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারদের জন্যই সম্ভব হয়েছে। তাই আরো উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা করতে হবে ইঞ্জিনিয়ারদের। 
                                ডাঃ সাহা বলেন, রাজ্যের নিজস্ব পণ্যগুলি ব্যবহার করে আগামীদিনে কিছু করা যায় কিনা সেটা দেখতে হবে ইঞ্জিনিয়ারদের। যাতে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা সহজ হয় এবং রাজ্যের মাথাপিছু আয় ও জিএসডিপি বৃদ্ধি পায়। 

                                      অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, এনআইটির ডিরেক্টর প্রফেসর শরৎ কুমার পাত্র, পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ার্স এর চেয়ারম্যান পরমানন্দ সরকার ব্যানার্জি, পূর্ত দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার রাজীব দেববর্মা সহ বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ার সংগঠনের প্রতিনিধি ও আধিকারিকগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *