আগরতলা।।
এ.আই-এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার শিক্ষাকে আরও কার্যকর এবং সহজলভ্য করেছে। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে সরকার। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা হচ্ছে।আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে মহারাজা বীর বিক্রম (এমবিবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজ্যপাল তথা মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়কে সার্বিকভাবে গুণমানসম্পন্ন একটি উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, সমাবর্তন অনুষ্ঠান ডিগ্রিপ্রাপ্ত পড়ুয়াদের জীবনের একটি বিশেষ মুহূর্ত। প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার একটা ঐতিহ্য রয়েছে। আগে বিদেশ থেকে পড়ুয়ারা আমাদের দেশের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে আসতেন। শিক্ষার এই ঐতিহ্য পুনরুদ্বারে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আমাদের দেশের ঐতিহ্যগত কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও পরম্পরার উপর ভিত্তি করে দীর্ঘ বছর পর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা হচ্ছে। গণিত, বিজ্ঞান, যোগব্যায়াম এবং দর্শনশাস্ত্রে ভারতের অবদান এখনও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ এই গৌরবপূর্ণ ঐতিহ্যকে আধুনিক পাঠ্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্য রেখে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমের উপর একটি কোর্স চালু করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের সুযোগ আরও প্রসারিত করতে এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ, এমবিএ, বিসিএ, এমসিএ, বিএসসি এবং বায়োটেকনোলজিতে এমএসসি কোর্স চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এ.আই)-এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার শিক্ষাকে আরও কার্যকর এবং সহজলভ্য করেছে। ইতিমধ্যে কলেজগুলির জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর নিয়োগ করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে নতুন কলেজ খোলা হচ্ছে। ছাত্রীদের জন্য টিউশন ফি মকুব করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা এবং মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগাযোগ যোজনার মতো প্রকল্পও চালু করা হয়েছে। যোগ্য শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে স্কুটি বিতরণ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ডিগ্রিপ্রাপ্ত পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে পা রাখার সাথে সাথে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। তবে যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জীবনে এগিয়ে যেতে হবে। সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি বিনয়ী হতে হবে শিক্ষার্থীদের। মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত সকলের ভবিষ্যৎ জীবন ও প্রচেষ্টার সফলতা প্রত্যাশা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি টি অমরনাথ গৌর, মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিভাস দেব, শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. সুমন্ত চক্রবর্তী, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পদ্মশ্রী ড. অরুণোদয় সাহা সহ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদগণ। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি টি. অমরনাথ গৌড়কে ডিগ্রি অব লিটারেচার (Honoris Causa) সম্মানে ভূষিত করা হয়। এর পাশাপাশি পিএইচডি, স্নাতকোত্তর, স্নাতক ডিগ্রি প্রাপ্ত পড়ুয়া সহ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা পড়ুয়াদের উত্তীর্ণ হওয়ার শংসাপত্র প্রদান করা হয়। ১৩৫ জন কৃতীকে একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পদক ও শংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করেন রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা সহ অন্যান্য অতিথিগণ।