আগরতলা, ২৯ জুন: রাজ্যে আমচাষকে উৎসাহিত করতে ২০১৮ সাল থেকে ৭০৬ হেক্টর নতুন জমিতে আমচাষ শুরু হয়েছে এবং এবার ধলাই জেলার গণ্ডাতুইসা তে ১৮ হেক্টর পুরাতন আমবাগান পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার গণ্ডাতুইসার নারিকেল কুঞ্জে আয়োজিত ‘মনসুন ম্যাঙ্গো ফিয়েস্তা ২০২৫’ অনুষ্ঠানে একথা জানান কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন ত্রিপুরার উপযোগী আবহাওয়া, মাটি এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত আম চাষের জন্য আদর্শ। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যে ফল চাষে জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে কৃষকেরা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারেন।
তিনি জানান নাগিছড়া উদ্যান ও গবেষণা কেন্দ্রে বিভিন্ন উন্নত প্রজাতির আমের চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে ১৩টি দেশীয় (যেমন– অম্বিকা, অরুণিকা, আম্রপালি, হিমসাগর ইত্যাদি) এবং ২২টি বিদেশি প্রজাতি (যেমন– মিয়াজাকি, হরিভাঙা, ইয়েলো ব্যানানা, জাপানিজ অল টাইম, থাই হিমসাগর ইত্যাদি) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজ্যে ফল চাষের আওতায় রয়েছে ৫৮,৪৯১ হেক্টর জমি, যার মধ্যে আম চাষ হচ্ছে ১০,১৯২ হেক্টরে। মোট আম উৎপাদন ৫১,৩৬৮ মেট্রিক টন, গড় উৎপাদন ৫.০৪ মেট্রিক টন প্রতি হেক্টর।
কৃষিমন্ত্রী বলেন গণ্ডাছড়া মহকুমায় বর্তমানে ১৮৬ জন কৃষকের পরিচালনায় ২৭৭ হেক্টর জমিতে ৪টি দেশীয় ও ১৮টি বিদেশি উন্নত প্রজাতির আম বাগান রয়েছে। এখানকার গড় উৎপাদন ৮–৯ মেট্রিক টন প্রতি হেক্টর, যেখানে জাতীয় গড় ৯.৬৬ মেট্রিক টন। প্রতি হেক্টরে বার্ষিক নিট আয় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা।
তিনি আরও জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কৃষি সিঞ্চন যোজনার (PMKSY) প্রকল্পের অধীনে ৯টি আম বাগানে ড্রিপ সিঞ্চাই ব্যবস্থা চালু হয়েছে এবং ৩০ হেক্টর পুরনো বাগান পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এ বছর আরও ১৮ হেক্টর পুরনো বাগান পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও, উন্নত ফল চাষ প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণের জন্য গণ্ডাছড়ার ১৩০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
মন্ত্রী জানান যে চলতি বছরে গণ্ডাছড়া কৃষি মহকুমায় আরও ৫০ হেক্টর জমিতে নতুন আম বাগান গড়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ১০ হেক্টর জমিতে আনারস ও ১ হেক্টরে কাঁঠাল চাষের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই ১০টি সোলার-চালিত কুল চেম্বার স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর গণ্ডাছড়াতেও একটি নতুন সোলার কুল চেম্বার তৈরি করা হবে, যাতে চাষিরা ফল সংরক্ষণে আরও বেশি সুবিধা পান।