আগরতলা।।বিকশিত ত্রিপুরা তৈরীর জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যারা নেবেন তারা হলেন আমাদের রাজ্যের কৃষকগণ। কারণ কৃষকগণই হচ্ছেন আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতিকে মজবুত করার প্রধান কারিগর।

তাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে মাছের চাষে, প্রাণী পালন ও নানা শয্যাদি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষকদের সার্বিকভাবে আত্মনির্ভর করা ও বিকশিত করা। আজ মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিম জেলার মৎস্যচাষীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান ও বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে মৎস্য মন্ত্রী সুধাংশু দাস একথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বিকশিত ত্রিপুরা ২০৪৭ ডকুমেন্টের সূচনা করেছেন।

তিনি বলেন, ২০৪৭-এর বিকশিত ত্রিপুরা হবে সার্বিক ভাবে বিকশিত ত্রিপুরা সেখানে কোন দারিদ্রতা থাকবেনা। সেখানে কৃষকদের ক্ষমতায়নকে সুদৃঢ় ও নিশ্চিত করা হবে। তাই সরকার কৃষকদের উন্নয়নে বেশী করে বিভিন্ন অগ্রগতিমূলক সুপারিকল্পিত নীতি গ্রহণ করবে। মৎস্য মন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র কৃষিজাত ফসল উৎপাদনেই যেন কৃষকেরা থেমে না যান। প্রতিটি কৃষক পরিবার যাতে তাদের নিজের বাড়িতেই এক একটি ইন্টিগ্রেটেড ফার্ম তৈরী করে তুলতে পারেন, সরকার কৃষকদের সেই লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে ৯৯ শতাংশ মানুষই মাছ খেয়ে থাকেন। এই ৯৯ শতাংশ মানুষের মাথাপিছু মাছের যোগান দিতে গিয়ে রাজ্যকে বহিরাজ্য থেকে মাছ আমদানি করতে হয়। আমাদের মাছচাষীদের লক্ষ্য হবে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে মাছের চাষ করে গড় চাহিদা অনুযায়ী মাছের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করা। এছাড়া এই মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে যে শুধুমাত্র খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে তা নয়, সেই সাথে মৎস্যজীবিদের আর্থিক উন্নয়নও বাড়বে। কারণ মাছের চাষ হল, অতি সহজে অর্জন করা একটি লাভ জনক ব্যবসা। মৎস্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে যদিও অনেক কৃষকগণই ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং এ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সরকারও নানা সাহায্য সহায়তার মাধ্যমে তাদের আরো উৎসাহী করে তুলছে।

মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস তার ভাষণে রাজ্যের সফল মৎস্যচাষী কল্যাণপুরের লালচান, মোহনপুর কাতলামারার সুজিৎ দাস, গোমতী জেলার প্রিয়াংকা দেব সরকারের সফলতার কাহিনী উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন।তিনি বলেন, তারা প্রত্যেকেই মাছচাষের সাথে হাঁস, মুরগী পালন করে বছরে ১০ থেকে ২০ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, বিধায়ক মিনারানী সরকার। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক অন্তরা সরকার (দেব)।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ও বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জিরানীয়া, পুরাতন আগরতলা, বামুটিয়া ও মোহনপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যানগণ। অনুষ্ঠানে ৩০ জন মৎস্যজীবিকে ফ্লাড রিলিফ হিসেবে ৫৭৬০ টাকার চেক, ১৩২ জন মৎস্যজীবিকে মাছ সংরক্ষণ করে রাখার জন্য আইস বক্স এবং ১০ জন মৎস্যজীবিকে মাছ ধরার জাল দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ১ জনকে ৫০ হাজার টাকার কেসিসি লোন দেওয়া হয়।

মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস সহ অন্যান্য অতিথিগণ তাদের হাতে এই সহায়ক সামগ্রী তুলে দেন। এবছর ফ্লাড রিলিফ ফান্ডে পশ্চিম জেলার ২১৭৩ জন মৎস্যজীবি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা সন্তোষ দাস অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে একথা জানান। পশ্চিম জেলা মৎস্য বিভাগের উপ অধিকর্তা অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন আশা সংগীত কলা কেন্দ্রের শিল্পীরা। ১ জনকে ৫০ হাজার টাকার কেসিসির লোন দেওয়া হয়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *