আগরতলা।। রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে আকর্ষনীয় করে তুলতে হেলি ট্যুরিজম-এর উন্নয়ন এবং ডম্বুরের নারিকেলকুঞ্জে সি-প্লেইন চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

উত্তর পূর্বাঞ্চলে পর্যটনের প্রসারে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে আহ্বায়ক করে কেন্দ্রীয় ডোনার মন্ত্রকের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের টাস্ক ফোর্সের দ্বিতীয় সভায় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পর্যটনের উন্নয়নে এইসব বিষয়সমূহ তুলে ধরেন। ভার্চুয়াল সভায় আজ কেন্দ্রীয় ডোনার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সহ টাস্ক ফোর্সের অন্যান্য সদস্যগণও উপস্থিত ছিলেন। সচিবালয়ে ভিডিও কনফারেন্স হলে ভার্চুয়ালি আয়োজিত এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, পরিকল্পনা দপ্তরের সচিব এল টি ডার্লং এবং পর্যটন দপ্তরের সচিব ইউ কে চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উচ্চ সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র ও প্রকল্পগুলিকে চিহ্নিত করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে একটি কৌশলগত রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বর্তমান বিনিয়োগের পদ্ধতিগুলির মূল্যায়নের পাশাপাশি পর্যটন নীতি, ইনভেস্টমেন্ট ইনসেনটিভ স্কিম এবং রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক-এর পর্যালোচনা করার বিষয়ে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলে পর্যটনের প্রসারে এর আগে অনুষ্ঠিত টাস্ক ফোর্সের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সভায় আলোচিত বিষয়গুলির প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের গৃহীত উদ্যোগ ও পদক্ষেপগুলি মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরেন।

এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশে রাজ্য সরকার নতুন হোম স্টে গাইডলাইন চালু করেছে। এখন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৪৮টি হোম স্টে চালু রয়েছে। এইগুলি রাজ্যের পর্যটনের বিকাশ এবং স্থানীয় জনগণের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীকে ত্রিপুরা পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বেসেডর করা হয়েছে। পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে রাজ্যে প্রমো ফেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণের উদ্যোগ হিসেবে কৈলাসহর বিমানবন্দর চালু করার জন্য এনইআর-এর রিজিওন্যাল এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল এবং এমবিবি বিমানবন্দরের ডিরেক্টর সম্প্রতি কৈলাসহর বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন।

সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগমের আওতায় ২৯টি নিবন্ধিকৃত ট্যুর অপারেটর রয়েছে। রাজ্যে তাজ পুষ্পবন্ত প্যালেস হোটেল স্থাপনের জন্য রাজ্যের পর্যটন দপ্তর এবং ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে লিজ এগ্রিম্যান্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে। পর্যটনে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে রাজ্যের পর্যটন দপ্তর বিভিন্ন রোড শো, উত্তর পূর্বাঞ্চল বিনিয়োগ সম্মেলনসমূহে প্রতিনিয়ত অংশগ্রহণ করছে। বর্তমান ট্যুরিস্ট লজগুলির উন্নয়নেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের পর্যটনকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে বিভিন্ন প্রচার-প্রসারমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ সহ রাজ্যের পর্যটন দপ্তর এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর যৌথভাবে রাজ্যের ট্যুরিজম ইভেন্ট ও উৎসব নিয়ে একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করার উদ্যোগের কথাও মুখ্যমন্ত্রী এদিনের সভায় উল্লেখ করেন।

ভার্চুয়ালি এই সভায় অরুণাচল প্রদেশের পর্যটন মন্ত্রী পাসাং দরজি সোনা, সিকিমের পর্যটন মন্ত্রী শেরিং টি ভুটিয়া প্রমুখ উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *