আগরতলা, ২৮ এপ্রিল: তপশিলি অংশের মানুষের সার্বিক কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। সংবিধান প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরের নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখে জনকল্যাণে কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে তপশিলি জাতি ও অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণীর উন্নয়ন ও মহিলা স্বশক্তিকরণকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।

আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ভারতরত্ন ড. বি আর আম্বেদকরের ১৩৫তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির সমাপ্তি ও আলোচনা চক্রের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এদিন অনুষ্ঠানে আলোচনার মূল বিষয় ছিল ডঃ বি আর আম্বেদকর ও সামাজিক ন্যায় বিচার।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ড. বি আর আম্বেদকর ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি একাধারে দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, সমাজ সংস্কারক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী। আমাদের সংবিধান রচনার অন্যতম স্থপতি তিনি। দলিত মানুষের মুক্তির অগ্রদূত। গত ১৪ এপ্রিল ড. বি আর আম্বেদকরের জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রথম মন্ত্রিসভায় ১৯৪৭ থেকে ১৯৫১ পর্যন্ত প্রথম আইন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বহু প্রতিকূলতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ ও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে ড. বি আর আম্বেদকর কাজ করেছেন। বলতে গেলে তিনি একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। আজীবন নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। অনেকদিন পর হলেও ১৯৯০ সালে ড. আম্বেদকরকে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়। শিক্ষা, মেধা ও ক্ষুরধার লেখনীর অধিকারী ছিলেন তিনি। তাঁকে ভারতের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য ড. বি. আর আম্বেদকর অনেকগুলি প্রস্তাব এনেছিলেন। তিনি এই দেশকে শোষণ থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। ড. আম্বেদকর বলেছিলেন প্রত্যেককেই দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। ড. বি আর আম্বেদকর দেশ ও রাজ্যের প্রবৃদ্ধির জন্য শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন।

কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সারা জীবন নিরন্তর কাজ করে গিয়েছেন তিনি। এভাবে তিনি কাজ করায় আমরা এখানে আছি এবং একত্রে বসবাস করছি। তাই আগামী প্রজন্মকে অবশ্যই এই মহান ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানতে হবে যে তিনি দেশের সেবায় কি অবদান রেখে গেছেন। আমাদের অবশ্যই ইতিহাস সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে ডাঃ সাহা বলেন, আপনারা প্রত্যেকে দেখতে পাবেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাজকর্মে ড. বি আর আম্বেদকরের চিন্তাভাবনা ও আদর্শ প্রতিফলিত হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি দরিদ্র লোকদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় নিয়ে এসেছেন যাতে মধ্যস্থতাকারীদের (মিডলম্যান) হস্তক্ষেপ না থাকে। মুদ্রা যোজনা রূপায়নের মাধ্যমে জনজাতি ও তপশিলি অংশের মহিলাদের কল্যাণ নিশ্চিত করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মহিলাদের স্বাবলম্বী করার জন্য নিরন্তর কাজ করছেন। এমনকি আমাদের রাজ্য সরকারও পশ্চাদপদ শ্রেণীর লোক, তপশিলি এবং অন্যান্যদের জন্য অনেক প্রকল্প চালু করেছে।

                              
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডঃ বিশাল কুমার, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা জয়ন্ত দে সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *