আগরতলা।। প্রবীণ নাগরিকগণ আমাদের সমাজের বোঝা নয়। প্রবীণদের প্রতি আমাদের সম্মান, ভালোবাসা এবং সহমর্মিতার ক্ষেত্রটি প্রশস্ত করতে হবে, যাতে সমাজে আর কোনও বৃদ্ধাশ্রম গড়ে না উঠে। সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে প্রবীণ নাগরিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আজ আগরতলার শান্তিপাড়াস্থিত বিবেকানন্দ আবাসনে শান্তিপাড়া প্রবীণ নাগরিক সংঘ এবং অশ্বিনী নেত্রালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, নবীনদের তুলনায় প্রবীণদের স্বতঃস্ফূর্ততা কোনও অংশে কম নয়। সমাজের প্রতি কিছু করার তাগিদ তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। এই ধরনের চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণত চোখের সমস্যা এড়াতে নাগরিকদের ৪০ বছর বয়সের পরে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করা প্রয়োজন। তবে বর্তমান ডিজিটাল যুগে মোবাইল, ইন্টারনেট অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে আজকাল শিশুদের মধ্যেও চোখের সমস্যা দেখা যায়।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৭০ বছর ও তার বেশি বয়স্ক সব প্রবীণ নাগরিকদের তাদের আয় নির্বিশেষে আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনায় ৫ লক্ষ টাকা স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গত ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যেও মুখ্যমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনায় নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার সামাজিক ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ২ হাজার টাকা করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৪ লক্ষ ৮ হাজারের বেশি সুবিধাভোগীকে বিভিন্ন যোজনায় সামাজিক ভাতা প্রদান করা হয়েছে। এরজন্য ৫১৮ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়েছে। রাজ্য সরকারের এবারের বাজেটে চিফ মিনিস্টার্স স্কিম ফর মেন্টালি চ্যালেঞ্জড পার্সনস নামে একটি প্রকল্প চালু করার সংস্থান রাখা হয়েছে। এই প্রকল্পে মানসিকভাবে দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিদের ৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে বর্তমানে যারা ২ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন, তাদের আরও অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং পরিষেবার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগসমূহ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, প্রবীণদের প্রচুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা আগামীদিনে এগিয়ে যাবার প্রেরণা দেবে। প্রবীণ নবীন সবার সম্মিলিত প্রয়াসে সুন্দর এবং সুস্থ রাজ্য ও সমাজ গড়ে উঠবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আগরতলা পুরনিগমের কাউন্সিলার রত্না দত্ত।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. তপন মজুমদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী শ্যামল দেব। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন প্রবীণ নাগরিক সংঘের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র সাহা। শিবিরে ১১০ জন চক্ষু চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করেন।