আগরতলা।।সাম্প্রতিককালে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার চিত্র অনেকটাই উন্নত হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার আন্তরিক সদিচ্ছার কারণেই রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে। আজ আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে এ সংবাদ জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব আরও জানান, আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও জি.বি.পি. হাসপাতাল সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের জন্য উন্নত ও আধুনিক ব্যবস্থা উপলব্ধ রয়েছে। রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলেই বহিরাজ্যে রেফারেল রোগীর সংখ্যা ৩ ভাগের ১ ভাগে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি তথ্য সহকারে জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৭৭৪ জনকে বহিরাজ্যে রেফার করা হয়েছিল। সেই সংখ্যাটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কমে দাঁড়িয়েছে ৭২২ এবং ২০২৪-২৫-এ হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৬৯০। বিগত দিনে রাজ্যে বছরে প্রায় ২ হাজার রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বহিরাজ্যে রেফার করা হতো।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে সর্বদা চিন্তাশীল। মুখ্যমন্ত্রী প্রতি বুধবার মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে চিকিৎসার সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যে আগত জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে সহায়তা করে থাকেন। পাশাপাশি রাজ্যের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ গ্রহণ করার জন্যও মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য সচিব বলেন, রাজ্যের জনগণকে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে রাজ্যের প্রধান তিনটি হাসপাতাল জি.বি.পি. হাসপাতাল, আই.জি.এম. হাসপাতাল এবং ক্যান্সার হাসপাতালে প্রায় ২ হাজার ২০০টি শয্যা রয়েছে। এই তিনটি হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করে থাকেন। স্বাস্থ্য সচিব জানান, জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের জন্য এ.জি.এম.সি. ও জি.বি.পি. হাসপাতালে বিভিন্ন স্পেশালিটি পরিষেবা এবং ৯টি সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা চালু রয়েছে।
তিনি বলেন, রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা ও মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সুবিধা রোগীরা যথাযথভাবে গ্রহণ করছেন। রাজ্য সরকার টি.পি.এস.সি.-র মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। গত মাসে ৪৫ জন বিশেষজ্ঞ ডা. নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার স্ত্রী রোগের বিশেষ চিকিৎসার জন্য বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের সব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাপের কামড়ের প্রতিষেধক রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ২৪x৭ বেসিক ল্যাব, সিটি স্ক্যান, ইউ.এস.জি., এক্স রে, এম.আর.আই, ব্লাড ব্যাঙ্ক, ট্রমা কেয়ার সেন্টার, ইমার্জেন্সি কেয়ার, ও.টি, ডায়ালাইসিস ও অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু রয়েছে।
তিনি জানান, রাজ্য সরকার ২০০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু হাসপাতাল সহ মোট ৮টি পরিষেবা ও কোর্স চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এছাড়াও আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও জি.বি.পি. হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে আই.সি.ইউ. শয্যা রয়েছে ১১৬টি। স্বাস্থ্য সচিব আরও জানান, যে সমস্ত অস্ত্রোপচারের সুবিধা রাজ্যে নেই আগামীদিনে সেগুলি বহিরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে পরিষেবা প্রদানের চেষ্টা করা হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও জি.বি.পি. হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. শঙ্কর চক্রবর্তী, অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওনাল ক্যান্সার হাসপাতালের সুপার ডা. শিরোমণি দেববর্মা, কার্ডিওলজি বিভাগের ডা. অনিন্দ সুন্দর ত্রিবেদি, আই.জি.এম. হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. দেবশ্রী দেববর্মা, জি.বি.পি. হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ডা. মণিরঞ্জন দেববর্মা, নিউরোলজি বিভাগের ডা. রেড্ডি, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের ডা. জয়ন্ত রায় আলোচনা করেন।