আগরতলা: সারা বছর ধরে ঘন ঘন নির্বাচন উন্নয়নের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, আর্থিক সংস্থান এবং স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করে। এজন্য এক দেশ, এক নির্বাচন শুরু হলে ভোটাররা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। আর এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও নাগরিক-বান্ধব এবং উন্নয়ন-ভিত্তিক করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার সংসদে এক দেশ, এক নির্বাচন বিল এনেছে।

                          
আজ আগরতলার সুকান্ত একাডেমিতে ভারতীয় জনতা পার্টির লিগ্যাল সেলের উদ্যোগে আয়োজিত 'এক দেশ, এক নির্বাচন' শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
                               এই কার্যক্রমে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা এক দেশ, এক নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা ও সময়োপযোগীতার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বছরের বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এতে কাজের অনেক ক্ষতি হয়। নির্বাচনে স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মী, আরক্ষা কর্মী সহ সংশ্লিষ্ট বহু কর্মীকে নিয়োজিত করতে হয়। যেকারণে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার ক্ষতি হয়। নির্বাচনের কারণে অধিক জনবলের প্রয়োজন হচ্ছে। আর জনবল না থাকলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন থমকে যায়। তাই এক দেশ এক নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। এই দাবি জোরালোভাবে করা উচিত। 
                                 আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে একযোগে নির্বাচন হলে আর্থিক ক্ষেত্রেও ব্যাপক সাশ্রয় হবে। সেই সঙ্গে প্রশাসনিক কার্যকারিতাও অনেক বৃদ্ধি পাবে। অথচ ১৯৫১ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলেছিল। কিন্তু মাঝখানে সমস্যা হয়। তাই সেই প্রক্রিয়াকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের সবাই মিলে এটাকে সমর্থন করতে হবে। এক্ষেত্রে আইনজীবীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। আজকে এখানে যে আয়োজন করা হয়েছে এরজন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। এটা আরো অনেক আগে করা প্রয়োজন ছিল। 
                            মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং তিনি তা পূরণ করছেন। তিন তালাকের ক্ষেত্রে আমরা অনেককে কুম্ভীরশ্রু বর্ষণ করতে দেখেছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এটিকে বাতিল করে দিয়েছেন। অনেকে বলেছিলেন এতে দাঙ্গা তৈরি হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। আমাদের কাছে শুধু একজন হিম্মতওয়ালা ও একজন সত্যিকারের নেতা - প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দু'জন সত্যিকারের নেতা রয়েছেন - অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
                               ডাঃ সাহা বলেন, অনেকে ওয়াকফ সম্পর্কে কথা বলেছেন। কিন্তু তারা কী করেছে? অবৈধভাবে কোনও জমি দখল, সরকারি জমি দখল করে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে দাবি করা হয়। তাই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে এটিকে সংশোধন করার প্রয়োজন রয়েছে এবং এখন এটি ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫ এ পরিণত হয়েছে। তবে কিছু লোক সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় জনগণের কল্যাণে কাজ করছেন। তিনটি ফৌজদারি আইনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং এখন যে কেউ যে কোনও থানায় গিয়ে এফআইআর ফাইল করতে পারেন। এক দেশ, এক নির্বাচন অনেক দেশে প্রয়োগ করা হয়, তবে কেন আমাদের দেশে নয়? আমাদের লক্ষ্য বিকশিত ভারত গড়ে তোলা। আর বিরোধীরা যেসব দাবি করছেন তার কোনও ভিত্তি নেই। তারা শুধু অস্তিত্ব রক্ষার জন্য রাজনীতি করছে। 

                                  এদিন এই কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী সাহা রায়, বিজেপির সহ সভাপতি সুবল ভৌমিক, সমাজ কর্মী ডাঃ অশোক সিনহা সহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *