আগরতলা ।। সমস্ত অংশের নাগরিকদের যথাযথ সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে বর্তমান সরকার। রাজ্যের অনগ্রসর ব্লক এলাকার নাগরিকদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, গুণগত উন্নয়ন ও পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপ গোষ্ঠীর (সাব ট্রাইবস) সমাজপতি বা প্রধানদের সম্মান প্রদানের জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।

আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত সম্পূর্ণতা অভিযান সম্মান সমারোহ কার্যক্রমে অংশ নিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, কোন জায়গায় যাতে অসম্পূর্ণতা না থাকে তার জন্য এই সম্পূর্ণতা অভিযান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় বলছেন ১০০% সম্পূর্ণতা আসতে হবে। সেই দিশায় কাজ করছে রাজ্য সরকারও। বিভিন্ন প্রকল্পের ১০০% বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। আজ চিফ মিনিস্টার নবদিশা অভিযান ৫০ কোটি টাকা ও ৮০টি ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং ক্লাস্টার (আইএফসি) এর জন্য ৩২ কোটি টাকা সহ মোট ৮২ কোটি টাকার কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে। এর অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারগুলির উন্নতিসাধন করা। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যে রাজ্যে বর্তমানে ১ লক্ষ ৮ হাজার স্ব সহায়ক দল (এসএইচজি) হয়েছে। বিভিন্ন কারণে যারা এখনো স্ব সহায়ক দলে যুক্ত হতে পারে নি তাদের এই অংশ করে আর্থ সামাজিক ও জীবন যাত্রার মানোন্নয়নের জন্য এই অভিযানের সূচনা করা হয়েছে। টিআরএলএম এর অধীনে এখন পর্যন্ত রাজ্যে ৫৩,৯৫১টি স্ব সহায়ক দলে ৪ লক্ষ ৮৪ হাজার মহিলা যুক্ত রয়েছেন।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ধলাই জেলার গঙ্গানগর ব্লক ও উত্তর জেলার দশদা ব্লকে প্রায় চার হাজার দরিদ্র পরিবারের উন্নতির জন্য তৃপ্তি (TRIPTI) নামে একটি প্রকল্প চালু হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যের প্রায় ১৬টি ব্লকের প্রায় ১০ হাজার পরিবারের উন্নতির জন্য চিফ মিনিস্টার নবদিশা অভিযানের সূচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ একযোগে সারা দেশের কৃষকদের জন্য ডিবিটি’র মাধ্যমে সরাসরি ২০,৫০০ কোটি টাকা দিয়েছেন। এই অর্থরাশি থেকে ত্রিপুরা রাজ্য ৪৫,৪৩,৭৪,০০০ টাকা পেয়েছে। এটা কৃষকদের ২০তম কিস্তি প্রদান। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জিরো ব্যালেন্সে জনধন প্রকল্প চালু হয়েছিল। যার সুফল এখন পাচ্ছেন জনসাধারণ। এই যোজনায় সারা দেশে প্রায় ৫৫ কোটি একাউন্ট খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সম্পূর্ণতা অভিযানে ১১২টি এসপিরেশন্যাল জেলা ও ৫০০টি এসপিরেশন্যাল ব্লক নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সেখানে ৬টি মূল সূচক রাখা হয়েছে। নীতি অযোগের নির্দেশিকা মেনে নোডাল দপ্তর হিসেবে ত্রিপুরা সরকারের গ্রামোন্নয়ন দপ্তর বেশ ভালো কাজ করছে। কিছুদিন আগে নীতি আয়োগের আধিকারিকগণ রাজ্যে এসে ত্রিপুরায় বিভিন্ন প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন প্রত্যক্ষ করে খুশি হয়েছেন এবং ভুয়সী প্রশংসা করেছেন।

ডাঃ সাহা বলেন, রাজ্য সরকার চাইছে অনগ্রসর ব্লক এলাকার নাগরিকদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, গুণগত উন্নয়ন ও পরিবর্তন করার। এজন্য মনিটরিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটি ব্লকে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা, কৃষি, কৃষি সংকল্প বিষয় ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জনজাতি সমাজপতিদের ভাতা ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। জাতি জনজাতির মেলবন্ধনে গুরুত্ব দিয়েছে এই সরকার।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায়, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, পরিকল্পনা দপ্তরের সচিব এল টি ডার্লং, টিআরএলএম এর সিইও তড়িৎ কান্তি চাকমা, অতিরিক্ত সচিব কুন্তল দাস সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার সভাধিপতি সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *