আগরতলা, ৩ সেপ্টেম্বর: ২০১৮ সাল থেকে গত সাত বছরে ত্রিপুরা বিদ্যুৎ দপ্তর সৌরশক্তি থেকে ২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। আগামী দিনে সমস্ত সরকারি দফতরকে সৌরশক্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ ধলাই জেলার মনুতে ১৩২ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র উদ্বোধনকালে এ কথা জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।
মন্ত্রী বলেন মানুষ যে-ই হোক, যে রাজনৈতিক দলেরই হোক, উন্নয়ন সবার জন্য হওয়া উচিত। বিদ্যুৎ ছাড়া কেউ বাঁচতে পারে না। বিদ্যুতের চাহিদা যত বাড়ছে, বুঝতে হবে রাজ্য তত উন্নতির পথে এগোচ্ছে।
তিনি জানান, ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে বিদ্যুৎ ভোক্তার সংখ্যা ছিল ৭.২১ লক্ষ। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৩৮ লক্ষে। একইসঙ্গে অবকাঠামোতেও হয়েছে ব্যাপক উন্নতি। আগে যেখানে ১৩২ কেভি সাব-স্টেশন ছিল ১২টি, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ২০টি এবং আরও দু’টি নির্মাণাধীন। ৩৩ কেভি সাব-স্টেশন ছিল ৪৪টি, এখন হয়েছে ৭৫টি এবং আরও ১৮টি তৈরি হচ্ছে। আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের দৈর্ঘ্য যেখানে আগে ছিল ৯৫ কিমি, এখন তা দাঁড়িয়েছে ৫৭১ কিমি।
মনুতে নতুন ১৩২ কেভি সাব-স্টেশন চালুর ফলে মনু, ছৈলেংটা, এসকে পাড়া, ধুমাচড়া, মাছলি, ৮২ মাইল, নেপাল টিলা, ছামনু , বাগছড়া, মানিকপুর, থালছড়া-সহ প্রায় ২১,৫৫৪ পরিবার বিদ্যুতের সুবিধা পাবেন বলে জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, গ্রাহকরা যদি তাঁদের এলাকায় নতুন ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার শুরু করেন, তবে তা বিদ্যুৎ দপ্তরকে জানানো উচিত, যাতে ট্রান্সফরমারের ক্ষমতা বাড়িয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে।
গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে রতন লাল নাথ বলেন বিদ্যুৎ সাধারণত বাতাস, কয়লা, জল, গ্যাস ও সূর্য থেকে উৎপন্ন হয়। আমাদের রাজ্যে বেশিরভাগ বিদ্যুৎ গ্যাস থেকে তৈরি হয়। কিন্তু গ্যাস একদিন ফুরিয়ে যাবে। রুখিয়ায় ৬৩ মেগাওয়াট উৎপাদনের পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমানে গ্যাসের অভাবে মাত্র ১৯ মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে। পালাটানা, রামচন্দ্রনগর সর্বত্র একই পরিস্থিতি। তাই এখন সৌরশক্তির উপর নির্ভর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বলেছেন বাঁচতে হলে সৌরশক্তিকে গ্রহণ করতে হবে। ২০১৮-র আগে মাত্র ৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপন্ন হত। কিন্তু আমাদের সরকার আসার পর গত সাত বছরে ২৯ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়েছে। আগামী দুই বছরে ৫০ হাজার বাড়িতে ও ১০ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে সৌরপ্লেট বসিয়ে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত সরকারি দফতর সৌরশক্তির আওতায় আসবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদ-র এমডিসি বিমলকান্তি চাকমা, এমডিসি সঞ্জয় দাস, বিধায়ক পল দাংশু, বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমা, জেনারেল ম্যানেজার (ট্রান্সমিশন), সমাজসেবী সঞ্জিত দেববর্মা, রতীশ ত্রিপুরা, অভিজিৎ ত্রিপুরা এবং জয়বাহাদুর রুপিনি।