আগরতলা: রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে সুর্যমণিনগরে ৪০০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি নতুন সাবস্টেশন স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তর। একইসঙ্গে ধাপে ধাপে প্রতিটি কৃষি উপ-বিভাগে একটি করে কৃষক বন্ধু কেন্দ্র স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার এ তথ্য জানান বিদ্যুৎ, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ।এদিন তিনি কৈলাশহরের ১৩২ কেভি সাব-স্টেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ধর্মনগর থেকে কৈলাশহর (গৌরনগর) পর্যন্ত নতুন ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট ট্রান্সমিশন লাইনের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি, চাণ্ডাইল (চন্ডিপুর আরডি ব্লক) এলাকায় একটি ‘কৃষক বন্ধু কেন্দ্র’-এরও উদ্বোধন করেন তিনি।মন্ত্রী জানান, পূর্বের ১৩২ কেভি সাবস্টেশনটির ক্ষমতা আগামী ১০ বছরের চাহিদা মাথায় রেখে বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন ডাবল সার্কিট লাইন চালুর ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহে আর কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না স্থানীয় মানুষকে।
এই প্রকল্পে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে, যা কেন্দ্র সরকার ও বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় এসেছে। এর ফলে মোট ৪৬,৩৫১ জন গ্রাহক উপকৃত হবেন।তিনি বলেন বিদ্যুৎ সবার জন্যই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মাত্র ১০ মিনিট বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলেই বহু সমস্যা দেখা দেয়। কৃষিক্ষেত্রেও বিদ্যুৎ অপরিহার্য। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কৈলাশহরে মাত্র ৩৬ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করেন। বিদ্যুৎ চুরি ও হুকলাইনের কারণে সৎ গ্রাহকরাও সমস্যায় পড়েন। তাই এই প্রবণতার বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।মন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে এবং টাওয়ার লাইনে ক্ষতি ঠেকাতে ইমার্জেন্সি রিস্টোরেশন সিস্টেম (ইআরএস) প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে।
কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন দেশকে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার আওতায় এনে বিশ্বে শস্যভাণ্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। রাজ্যে বর্তমানে ৪৭টি কৃষি উপ-বিভাগ রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে ধাপে ধাপে কৃষক বন্ধু কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ উদ্বোধন হওয়া কেন্দ্রটি রাজ্যের ৩৩তম কেন্দ্র।চলতি অর্থবছরে আরও ১০টি কৃষক বন্ধু কেন্দ্র (বামুটিয়া, লেফুঙ্গা, ওল্ড আগরতলা, মোহনভোগ, তেপানিয়া, বি.সি.নগর, পুয়াংবড়ি, গঙ্গানগর, জুবরাজনগর ও লালজুড়ি) চালু হবে। ফলে ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে মোট ৪৩টি কেন্দ্র চালু হবে।
গৌরনগর কৃষি উপ-বিভাগের অধীনে স্থাপিত আজকের কৃষক বন্ধু কেন্দ্রটি ৮২ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয়ে আরআইডিএফ প্রকল্পের অর্থায়নে তৈরি হয়েছে। অনুষ্ঠানে ২০ জন কৃষকের মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি, ৩০ জন কৃষকের মধ্যে ফলের চারা এবং ১০০টি বীজের মিনি-কিট বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিঙ্কু রায়, উনকোটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, টিএসইসিএল-এর এম.ডি বিশ্বজিৎ বসু, টিপিটিএল-এর জিএম (ট্রান্সমিশন) রঞ্জন দেববর্মা, উদ্যানপালন দপ্তরের অধিকর্তা দীপক কুমার দাস, উনকোটি জেলা শাসক তমাল মজুমদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।