আগরতলা।।এইডসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংঘবদ্ধভাবে সাহস ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকার ৮ম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সেক্স এডুকেশন (যৌন শিক্ষা) এবং এইচআইভি/এইডস সম্পর্কিত একটি চ্যাপ্টার পাঠক্রমে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে এবং এবিষয়ে শীঘ্রই শিক্ষা দপ্তরের সাথে আলোচনা করা হবে।
এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির উদ্যোগে আজ রাজ্য বিধানসভার লবিতে আয়োজিত এইডস সম্পর্কিত এক সচেতনতা সভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, এধরণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা প্রয়োজনীয়। কারণ প্রায়শই বিধানসভার মধ্যে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, যা নিয়ে আমরা আলোচনা করি। আমাদের অবশ্যই এইচআইভি/এইডস নির্মূল করতে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের অবশ্যই এটি কৌশলগতভাবে পরিচালনা করতে হবে। নিয়মিত নজরদারি রাখার কারণে আমরা এইচআইভি/এইডস দ্বারা কত মানুষ আক্রান্ত হয় সেটা জানতে পারি। কোভিড পরিস্থিতির সময়ও আমাদেরও এধরণের নজরদারি রাখতে হয়েছিল।মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
তিনি বলেন, “যদি বিভিন্ন দলের নেতাগণ তাদের কর্মসূচির সময় এই ইস্যু সম্পর্কে অন্ততপক্ষে পাঁচ মিনিটের জন্য কথা বলেন, তবে এটি সত্যই সহায়ক হবে এবং মানুষ এবিষয়টি মনে রাখবেন। এইচআইভি/এইডস বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশের সাথে সীমান্ত রয়েছে এবং মাদকও রাজ্যে আসে। আমরা যদি এই সম্পর্কে সচেতন হই এবং এইচআইভি/এইডস এর প্রেক্ষাপটে কারণগুলি তুলে ধরে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করতে পারি, তবে সমাজের জন্য মঙ্গল হবে। এর পাশাপাশি আমরা ৮ম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সেক্স এডুকেশন ও এইচআইভি/এইডস সম্পর্কিত একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছি। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবিষয়ে খোলাখুলি কথা বললে বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করা যাবে। এইচআইভি/ এইডস রোগীদের জন্য বিধায়ক তহবিল থেকেও বরাদ্দ নেওয়া যাবে। শুধু ছেলেরা নয়, মেয়েরাও এতে আক্রান্ত হচ্ছে। মাদক এবং এইচআইভি/ এইডস থেকে দূরে রাখার জন্য ছেলেমেয়েদের আরো বেশি করে খেলাধুলা, সংস্কৃতি ও অন্যান্য ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। ২০২৩ সালের তুলনায়, ২০২৪ সালে ড্রাগস বাজেয়াপ্ত করার পরিমাণ ১০৬% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মাদক ধ্বংসের পরিমাণ ১৩২% বৃদ্ধি পেয়েছে। সমস্ত জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্ত হতে হবে। আর দেশের মধ্যে ত্রিপুরা প্রথম রাজ্য যেখানে স্কুলগুলিতে রেড রিবন ক্লাব চালু করা হয়েছে। এইচআইভি/এইডস সম্পর্কিত ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয় – এটি একটা ভাইরাস। যার কোন রাজনৈতিক রঙ নেই।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ, মুখ্য সচেতক কল্যাণী সাহা রায়, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকগণ।