আগরতলা।।এবছর সি.বি.এসই পরিচালিত দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় থাকা বিদ্যালয়গুলিতেও ছাত্রছাত্রীরা উল্লেখযোগ্য ফলাফল করেছে। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার এবছর সিবিএস.ই, দশম ও দ্বাদশের ফল প্রকাশ প্রসঙ্গে এই সংবাদ জানান। তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর দশম এবং দ্বাদশ পাশের হার অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর দশম শ্রেণির পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশের হার ৮৬ শতাংশ। যা গতবছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। তিনি জানান, এবছর রাজ্যের ১৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ পাশ করেছে। যেখানে গত বছর মাত্র ১টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ পাশ করেছিলো। এই ১৫টি স্কুলের মধ্যে ১২টি স্কুল বাংলা এবং ৩টি ইংরেজি মাধ্যমের। এবছর দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৬৬টি বিদ্যালয়ের পাশের হার ৯০ শতাংশের বেশি। যেখানে গত বছর মাত্র ৫টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পাশের হার ৯০ শতাংশের বেশি ছিল। ৮১টি স্কুলে পাশের হার ৮১ শতাংশের বেশি। মাত্র ৫টি স্কুলে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশের হার ৫৭শতাংশের কম। মাত্র ১৩.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছে সাপ্লিমেন্টারির আওতায়। তিনি জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী সি.বিএসই পরিচালিত দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফলে বিলোনীয়া সরকারি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের ছাত্র সুরজ বসু ৪৯৬ নম্বর (৯৯.২ শতাংশ) পেয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।

এবছর দশম শ্রেণির সি.বি.এস.ই, পরীক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছাত্রছাত্রীদের পাশের হারের তথ্য তুলে ধরে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব জানান, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় পাশের হার ৯২ শতাংশ, খোয়াই জেলায় ৮৯ শতাংশ, ঊনকোটি জেলায় ৮৮ শতাংশ, সিপাহীজলা জেলায় ৮৮ শতাংশ, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ৮৭ শতাংশ, গোমতী জেলায় ৮৬ শতাংশ, ধলাই জেলায় ৮৪ শতাংশ এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় পাশের হার ৮২ শতাংশ।বিশেষ সচিব এবছর সি.বি.এস.ই পরিচালিত দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফল সম্পর্কে বলেন, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় রাজ্যে পাশের হার ৭১ শতাংশ। যা গত বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের ১০০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পাশ করেছে। যেখানে গত বছর একটি বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ পাশ করতে পারেনি। এই ৫টি স্কুলের মধ্যে ৩টি বাংলা এবং ২টি ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়। তিনি আরও জানান, এবছর দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় রাজ্যের ২৫টি স্কুলের পাশের হার ৯০ শতাংশের বেশি। যেখানে গত বছর মাত্র ২টি বিদ্যালয়ের পাশের হার ছিলো ৯০ শতাংশ। রাজ্যের ৬৯টি বিদ্যালয়ে ৭১ শতাংশের বেশি পাশ করেছে।

তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৪৯১ নম্বর পেয়ে (৯৮.২ শতাংশ) শিশু বিহার স্কুলের তপেশ্বর পাল সর্বোচ্চ নম্বরের অধিকারী হয়েছে। সচিব রাজ্যের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় (সি.বি.এস.ই. পরিচালিত) বিভিন্ন জেলার পাশের পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, উত্তর ত্রিপুরায় ৮৫ শতাংশ, ধলাই জেলায় ৮৪ শতাংশ, ঊনকোটি ৮১.৩ শতাংশ, খোয়াই ৮০.৮ শতাংশ, দক্ষিণ ত্রিপুরা ৭৭.৭ শতাংশ, পশ্চিম ত্রিপুরা ৭২.২ শতাংশ, গোমতী ৫১ শতাংশ এবং সিপাহীজলা জেলার ছাত্রছাত্রীদের পাশের হার ৪৭.৯ শতাংশ। সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার জানান, রাজ্য সরকার রাজ্যে গুণগত শিক্ষার প্রসারে এবং রাজ্য শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে চলছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন, সি. শর্মা আগামী বছর রাজ্যে সি.বি.এস.ই, পরিচালিত দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফল আরও ভালো হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বুনিয়াদী শিক্ষা দপ্তরে যুগ্ম অধিকর্তা হৃষিতা বিশ্বাস এবং শিক্ষা দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা (মাধ্যমিক) রাকেশ দেববর্মা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *