আগরতলা।। লাখপতি দিদির ক্ষেত্রে ৯৫% লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে ত্রিপুরা। পাশাপাশি রাজ্যে গ্রামীণ জীবিকা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৩২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ৮০টি আইএফসি (ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং ক্লাস্টার) চালু করেছে সরকার।

আজ আগরতলায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং ক্লাস্টার বিষয়ক জাতীয় কর্মশালায় অংশ নিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, এধরণের জাতীয় কার্যক্রমের আয়োজন ত্রিপুরার জন্য খুবই গর্বের বিষয়। কৃষি ক্ষেত্র হচ্ছে আমাদের দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড এবং গ্রামীণ পরিবারগুলির জীবন রেখা।

তিনি বলেন, জীবন জীবিকা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে, বিশেষ করে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য দীনদয়াল অন্ত্যদয় যোজনা – জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশনে ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং ক্লাস্টার (আইএফসি) কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় আমরা ইতিমধ্যে ৩২ কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ৮০টি ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং ক্লাস্টার (আইএফসি) চালু করে কার্যক্রম শুরু করেছি। এগুলি সম্পূর্ণতা অভিষান সম্মান সমারোহে ২ আগস্ট, ২০২৫ এ সূচনা করা হয়েছে। এই সংহত কৃষি ক্লাস্টারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুসংহত ও সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ পরিবারগুলির জীবিকা ও তাদের আয় আরো বৃদ্ধি করা।

তিনি বলেন, এখন রাজ্যে ৫৪,১১৩টি স্ব-সহায়ক গ্রুপ, ২,৪৭০টি গ্রাম সংস্থা এবং ১৭৩টি ক্লাস্টার-স্তরের ফেডারেশনে প্রায় ৪.৮৫ লক্ষ মহিলা সদস্য রয়েছেন।বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা আরো বলেন, তাদের জীবিকা শক্তিশালী করার জন্য ২,৬২৮ প্রডিউসার গ্রুপ এবং ১১৮ নন-ফার্ম কালেক্টিভ উন্নত করা হয়েছে এবং আমরা ৭৮৭ কোটি টাকা রিভলভিং ফান্ড ও কমিউনিটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড সহায়তা সহ ১,৬৭৭ কোটি টাকা ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করেছি। আমি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই যে এই মিশনে পুরো গতিতে এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা। আমাদের ইতিমধ্যে ১,০৮,২৮১ জন মহিলা, যা প্রায় ৯৫%, যারা লাখপতি দিদি হয়েছেন ত্রিপুরায়। ডাঃ সাহা আরও বলেছেন যে এই রূপায়ণ সম্ভব হয়েছে মহিলাদের দৃঢ়তা, সরকারী সহায়তার কারণে।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের মহিলারা এখন শূকর পালন, মৃৎশিল্প, পোলট্রি, ফিশারি, এন্টারপ্রেনারশিপ, মাইক্রো-এন্টারপ্রাইজেস, গ্রুপ-ভিত্তিক উদ্যোগ, ক্যাটারিং সার্ভিসেস এবং অ্যাগ্রো ইকোলজিক্যাল প্র্যাকটিসে যুক্ত রয়েছেন। যা গ্রামীণ ত্রিপুরাকে উজ্জীবিত ও আত্মনির্ভর করে তুলছে। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত উত্তর-পূর্ব রাইজিং সামিট ২০২৫ এ আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যথার্থ অর্থে বলেছেন যে উত্তর পূর্ব হচ্ছে অষ্টলক্ষী। পরিকাঠামো, যোগাযোগ এবং জীবিকা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে আমাদের সরকার। গত সাত বছরে, ত্রিপুরা বেশকিছু ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা রাজ্যের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের রুরাল লিভলিহুডের ডিরেক্টর রাজেশ্বরী এস এম, টিআরএলএম এর সিইও তড়িৎ কান্তি চাকমা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির আধিকারিক এবং অন্যান্য প্রতিনিধিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *