আগরতলা: রাজ্যের সব জায়গায় পানীয়জল সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মিশন মুডে কাজ করে চলছে বর্তমান সরকার। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ৬,৪৬,৭৫৮ পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
আজ রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় বেলায় বিধায়ক রাম পদ জমাতিয়ার আনীত একটি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৫ আগস্ট, ২০১৯ এ জলজীবন মিশন শুরু করেন। এরপরই গোটা ভারতবর্ষে একটা পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে। ত্রিপুরাতেও আমরা এই প্রকল্প ঘোষণা হওয়ার পর থেকে পানীয়জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তর পাহাড়ী সমতল জনবসতি এলাকায় যাতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়মিত ও দীর্ঘমেয়াদী পানীয়জল সরবরাহ করা যায় সেজন্য মিশন মুডে কাজ করে চলছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চার ভাগের তিন ভাগ স্থল, আর এক ভাগ জল। কাজেই গোটা পৃথিবীতে জলের একটা অভাব রয়েছে। আজকে এই সভায় এবিষয়ে অনেক সদস্য গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। তাদের কথা ও পরামর্শ নিশ্চয় গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দপ্তর ও সরকার থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডাঃ সাহা জানান, রাজ্যের পাহাড় ও সমতল সর্বত্র জনবসতি এলাকায় মোট পরিবারের সংখ্যা ৭,৫০,৮৪৯।
এরমধ্যে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ৬,৪৬,৭৫৮ পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। পাইপ লাইনের মাধ্যমে আগে প্রায় ৩% পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ ছিল। সেই প্রায় ৩% থেকে পরবর্তী সময়ে আমাদের সরকার ৮৬.১৪% পরিবারের মধ্যে পানীয়জলের সংযোগ দিয়েছে। পাহাড় ও সমতল জনবসতি এলাকায় বিশেষ করে এডিসি ৫৮৭ এবং ভিলেজ কাউন্সিলের ৬০৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, গভীর নলকূপ প্রকল্পে ৪,২১৬টি, স্বল্প ব্যাসের গভীর নলকূপ ১০,১৭৬টি, ভূপৃষ্ঠস্থ জল পরিশোধনাগার ৪০টি, আয়রন রিমুভ্যাল প্ল্যান্ট ১,৮৩১টি, উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রায় ৫৩১টি রয়েছে।
আমাদের রাজ্যের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে জলের উৎস যেমন – ভূগর্ভস্থ জল, নদী ছড়া ইত্যাদি ক্ষেত্রকে ব্যবহার করে গভীর নলকূপ, স্বল্প ব্যাসের গভীর নলকূপ, জল পরিশোধনাগার ও উদ্ভাবনী প্রকল্পের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ সব বাড়িঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। পাহাড়ী অঞ্চলে ছড়া, ঝর্ণার জলকে উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার মাধ্যমে পানীয়জল দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, পানীয়জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তর জলজীবন মিশন প্রকল্পগুলির গুণমান পর্যবেক্ষন, নজরদারি ও সচেতনতার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় মিশন মুডে কাজ করছে। জলজীবন মিশন প্রকল্প আগে ছিল ১.০ এবং সেখান থেকে এখন ২.০ হয়েছে। কেন্দ্রের বাজেটে ২০২৫ – ২৬ এ সেটা ঘোষিত হয়েছে। ডাঃ সাহা জানান, আমাদের রাজ্যে সিএম হেল্পলাইন ১৯০৫ এবং আমার সরকার পোর্টাল রয়েছে।
যেগুলিতে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য উত্থাপন করা যায় এবং সেখানে যথাসময়ে কাজের ব্যবস্থা করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এখন পর্যন্ত ২১টি এনএবিএল (ন্যাশনাল এক্রিডিটেশন বোর্ড ফর টেস্টিং এন্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরিজ) রয়েছে ত্রিপুরায়। বিভিন্ন জেলা, মহকুমা ও রাজ্য স্তরে এই টেস্টিং ল্যাবগুলি রয়েছে। যেগুলিতে জলের গুণমান পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।