আগরতলা, ৫ আগস্ট: সংস্কৃতি আমাদের মানসিক ও আধ্যাত্মিক শান্তি লাভের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী মিশ্র সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার প্রয়াস নিতে হবে। এজন্য সংস্কৃতির উন্নয়নকে গণআন্দোলনে পরিণত করতে হবে।

                      
আজ সচিবালয়ের ২নং কনফারেন্স হলে পুনর্গঠিত রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির প্রথম সভায় আলোচনা করতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। উল্লেখ্য, রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। পুনর্গঠিত এই কমিটিতে মোট ৩৯ জন সদস্য সদস্যা রয়েছেন।

                           সভায় আলোচনার পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী পুনর্গঠিত রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সদস্যাদের সঙ্গে পরিচিত হন। সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি হলো একটি সমাজের অলংকার। বর্তমানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় নিজস্ব সংস্কৃতির আধুনিকীকরণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী মিশ্র সংস্কৃতিকে যত্ন করে লালন পালন করার বিষয়েও সচেষ্ট থাকতে হবে। এক্ষেত্রে জাতি জনজাতিদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে বজায় রেখে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে নতুনত্ব আনার প্রয়াস নিতে হবে। তবেই যুব সমাজকে আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করা যাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায়শই দক্ষতা উন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করে থাকেন। তাই সংস্কৃতি সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দক্ষতা উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। রাজ্যের যে কোনও অঙ্গনের শিল্পীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপনার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। গ্রামস্তর থেকে প্রতিভাবান শিল্পীদের খুঁজে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।
                          
সভায় মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা আরো বলেন, আধুনিকতার চাপে কীর্তন, পুতুল নাচ, যাত্রার মতো ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিগুলি হারিয়ে যেতে বসেছে। উদ্ভাবনী চিন্তাধারার মাধ্যমে এগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াস নিতে হবে। সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা এবং রাজ্যের ঐতিহ্য ও কৃষ্টিকে সংরক্ষণ ও তার ব্যাপক প্রচার প্রসারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
                          
সভায় আলোচনা করতে গিয়ে রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে জাতি, জনজাতি নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী স্বাগত আলোচনায় দপ্তরের বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১৯টি নতুন সাংস্কৃতিক কর্মসূচি তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের বার্ষিক পঞ্জিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থাকে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তা করা হয়ে থাকে। এই অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ২৪টি সাংস্কৃতিক সংস্থাকে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া, তিনি রাজ্যের সিগনেচার ফেস্টিভেল আয়োজন, ব্লকস্তর থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত ত্রিপুরা আইডল আয়োজন সহ কালচারেল পলিসি তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সভায় প্রস্তাব রাখেন। 
                    
সভায় উপদেষ্টা কমিটির অন্যান্য সদস্য সদস্যারাও রাজ্যের সংস্কৃতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সভায় এছাড়াও আলোচনা করেন পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত বাদল নেগি। সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য সহ দপ্তরের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *