আগরতলা।।রাজধানীর বন্যা কবলিত এলাকা ও ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। সেই সঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকায় এখনো যারা বাড়িঘরে রয়েছেন তাদের প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে মুখ্যমন্ত্রী আজ রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য ও আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পাশে নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। খতিয়ে দেখেন দুর্যোগ মোকাবিলার যাবতীয় ব্যবস্থাপনা। উল্লেখ্য, দুদিনের টানা বর্ষণে আগরতলা সহ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। সেই সঙ্গে হাওড়া নদী ও কাটাখালের জলস্তর বৃদ্ধি পায়। এতে নদী তীর সংলগ্ন বহু বাড়িঘরে বন্যার জল ঢুকে যায়। যে কারণে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয় বহু মানুষকে।
বন্যার্তদের আশ্রয় দিতে পশ্চিম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ত্রাণ শিবির খোলা হয়। রবিবার দুপুরে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রপুর, প্রতাপগড় ও বড়দোয়ালি সহ বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এর পাশাপাশি স্বামী দয়ালানন্দ স্কুল, রামঠাকুর গার্লস স্কুল, বিবেকানন্দ স্কুল, প্রগতি স্কুল সহ বিভিন্ন ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করে মানুষের খোঁজখবর নেন তিনি। কথা বলেন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সঙ্গে। জেনে নেন তাদের সমস্যা সম্পর্কে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রিত মানুষের থাকা খাওয়ার যাতে কোন সমস্যা না হয় সেবিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
পরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত দুদিন ধরে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শুধু ত্রিপুরায় নয়, সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আসামের শিলচর, অরুণাচল সহ বিভিন্ন প্রদেশে প্রচুর পরিমাণে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল ও আজকে মিলে এখানেও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে বেশি বৃষ্টি হলেও জমা জল সরে গিয়েছে। এতে বোঝা যায় যে জলের বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা ঠিক রয়েছে। যদিও এনিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। আজ শ্রীলঙ্কা বস্তি সহ বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করতে বেরিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২৪/২৫টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। বিভিন্ন স্কুলে বন্যার্তদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেডিকেল টিমকেও তাদের স্বাস্থ্যের পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। স্যানিটারির ব্যবস্থা ঠিক রাখতেও নির্দেশ দিয়েছি। আমাদের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, ভলান্টিয়ার, আপদা মিত্র সবাই মিলে কাজ করছে। এধরণের দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমরা কতটুকু প্রস্তুত রয়েছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সেভাবেই প্রশাসন, পুর নিগমের কর্মী আধিকারিকগণ কাজ করছেন। আমাদের কার্যকর্তাগণও প্রচুর পরিশ্রম করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, যারা এখনো বন্যা কবলিত এলাকায় বাড়িঘরে রয়েছেন তারা যাতে প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসেন। নাহলে পরে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এবিষয়ে আমরা বিভিন্ন জায়গায় মাইকিংও করছি যাতে তারা চলে আসেন।পরিদর্শনকালে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, পশ্চিম জেলার জেলাশাসক বিশাল কুমার সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকগণ।