আগরতলা : মানুষের সার্বিক কল্যাণ সাধনে নিরন্তর কাজ করে চলছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। এই ধারা আগামীদিনেও অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি রক্তদানের ক্ষেত্রেও সারা ভারতবর্ষে একটা উল্লেখযোগ্য স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা।

আজ আগরতলা আদালত চত্বরে ডিড রাইটার্স এসোসিয়েশনের ৭০তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ডিড রাইটার্স এসোসিয়েশনের ৭০তম বর্ষপূর্তি হয়েছে। যা একটা দীর্ঘ সময়। এই এসোসিয়েশনের অনেক সদস্যের সঙ্গে আমার পূর্ব পরিচয় রয়েছে। আমি আজ এখানে এই সংগঠনের প্রয়াত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছি। তাঁদের অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। আপনারা মানুষের জন্য কাজ করছেন। যা একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা। জায়গা, সম্পত্তি ইত্যাদি বিষয়ে সাধারন মানুষ ডিড রাইটার্সদের কাছে যান। মানুষ বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের কাছে যান। মানুষ অনেক আশা নিয়ে আসে যে তাদের কাজটা আইন সম্মতভাবে হবে এবং ভবিষ্যতে কোন সমস্যা হবে না। তাই মানুষের এই আস্থা বজায় রাখতে হবে আপনাদের। আর ডিড রাইটার্সদের কাজে অনেক টেকনিক্যাল বিষয় রয়েছে। পুরনো যারা ডিড রাইটার্স রয়েছেন তাদের কাজ খুবই সুন্দর। যা একটা শিক্ষনীয় বিষয়। এখনো অনেকে সেই কাজের ধারা বজায় রেখেছেন।

আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ৭০তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ডিড রাইটার্স এসোসিয়েশন যে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছে সেটা সমাজের কাছেও একটা ভালো বার্তা যাবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আপনারা এটা করেছেন। আমাদের শরীরের ওজনের তুলনায় রক্ত অনেকটা বেশি থাকে। তাই উদ্বৃত্ত রক্তদান করলে মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচানো যায়। রক্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে সারা ভারতবর্ষে একটা উল্লেখযোগ্য স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। সেই ধারা সমানে অব্যাহত রয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বর্তমানে ১৪টি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। এরমধ্যে সরকারি ১২টি ও বেসরকারি ২টি। আগামীদিনে আরো ব্লাড ব্যাংক গড়ে তোলা হবে। এখন রক্তের শ্রেণী বিন্যাসের ব্যবস্থা রয়েছে। যা আগে ছিল না। আমরা চেষ্টা করছি যাতে মানুষের কল্যাণে কাজ করা যায়। আর আমরা মানুষের কল্যাণেই কাজ করতে চায়। আমাদের রাজ্যে প্রায় ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার অনুপাতে ১% হারে ৪০,০০০ ইউনিট রক্তের মজুত রাখতে হবে। গত অর্থ বছরে প্রায় ৪০,০০০ ইউনিটের অধিক রক্ত সংগৃহীত হয়েছে। মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রক্তদানে এগিয়ে আসছেন। তবে এখনো যারা রক্তদানে এগিয়ে আসেন নি আমি তাদের আহ্বান রাখবো যাতে তারাও রক্তদানে সামিল হন। রক্তের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য রাখতে হবে। ১৮ বছরের অধিক তরুণ তরুণীদের স্বেচ্ছা রক্তদানে এগিয়ে আসা উচিত। ৬০ বছর পর্যন্ত সুস্থ ব্যক্তিরা রক্ত দিতে পারেন। মহিলারা বছরে তিনবার এবং পুরুষরা বছরে চারবার রক্ত দিতে পারেন। রক্তদান করলে নিজের শরীরেরও পরীক্ষা হয়ে যায়। কোন রোগব্যাধি থাকলে সেটা নির্নয় করা যায়। ব্লাড প্রেসার, হার্ট ইত্যাদির ঝুঁকি এড়াতে রক্ত দেওয়া খুবই ভালো।

এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পুর নিগমের কর্পোরেটর জাহ্নবী দাস চৌধুরী, জগন্নাথ বাড়ি মন্দিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমল কৃষ্ণ মহারাজ, প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রামনগর শাখার ভারপ্রাপ্ত বি কে মমতা, সদরের সাব রেজিস্ট্রার রঞ্জিত কুমার দাস, ডিড রাইটার্স এসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ কুমার পাল, সমাজসেবী শ্যামল কুমার দেব সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *