আগরতলা, ৩০ মে।।

গত দু’দিনে রাজ্যে অবিরাম বর্ষণের ফলে বেশ কিছু নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ রাজ্যের মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা এবং রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডের সঙ্গে রাজ্যের দু’দিনের বর্ষণজনিত পরিস্থিতির বিষয়ে পর্যালোচনা করেন।

আজ সন্ধ্যায় মহাকরণে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডে বর্ষণজনিত উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন। রাজস্ব সচিব জানান, গত দু’দিনের বর্ষণে পশ্চিম জেলার জিরানীয়ায় জলে ডুবে একজনের প্রাণহানীর খবর পাওয়া গেছে। ১০৬টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৩৩টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয় ৭৩টি ঘর। পশ্চিম ত্রিপুরা এবং খোয়াই জেলায় ৪টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম জেলায় ৩টি এবং খোয়াই জেলায় একটি। এই শিবিরগুলিতে ৫৭টি পরিবারের ২০৭ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি জানান, গাছ ভেঙ্গে এবং রাস্তায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ায় পানিসাগর, লংতরাইভ্যালি, জম্পুইজলা, জিরানীয়া, মোহনপুর, সদর, করবুক এবং সাব্রুম মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়। টি এস আর, বন দপ্তর এবং স্টেট ডিজাস্টার রিলিফ ফোর্স এবং স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় রাস্তায় দ্রুত যান চলাচল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করা হচ্ছে। বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলির বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। রাজস্ব সচিব জানান, আগরতলায় জহরব্রীজ এলাকায় হাওড়া নদীর জলস্তর বর্তমানে নিম্নগামী। রাজ্যের অন্যান্য নদীগুলিরও জলস্তর বিপদসীমার নিচে। স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে আবহাওয়া দপ্তর, কেন্দ্রীয় জল কমিশন ও পূর্ত (জল সম্পদ) দপ্তরের সাথে সমন্বয় রেখে প্রতিনিয়ত নদীগুলির জলস্তরের মনিটরিং করা হচ্ছে।

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামীকাল অর্থাৎ ৩১ মে ২০২৫ উত্তর জেলা এবং উনকোটি জেলায় লাল সতর্কতা এবং অন্য জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজ্য সরকার বর্ষণজনিত সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর প্রতিনিয়ত নজর রাখছে এবং বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করছে, যাতে উদ্ধার, ত্রাণ কাজ এবং কোন ধরনের বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ঝুঁকি কমানো যায়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গত ২৮ মে রাজ্যের সমস্ত জেলার জেলাশাসকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি, পদক্ষেপ, ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে নিযুক্ত কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত জেলায় এন ডি আর এফ অথবা এস ডি আর এফ-কে প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। রাজস্ব দপ্তরের পক্ষ থেকে জেলা শাসকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণের তথ্য তুলে ধরা হয়, তাতে দেখা যায় সিপাহীজলা জেলার মোহনভোগে সবচেয়ে বেশী বৃষ্টি হয়েছে ২০৪৮ মিলিমিটার এবং আগরতলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২১.৬ মিলিমিটার। আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব তমাল মজুমদার এবং স্টেট প্রজেক্ট অফিসার (বিপর্যয় মোকাবিলা) শরৎ দাস উপস্থিত ছিলেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *