আগরতলা।।কতিপয় মিটার রিডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল জালিয়াতির ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম এবং এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
তাঁর স্পষ্ট বার্তা, দোষী প্রমাণিত হলে, তাহলে কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।মন্ত্রী জানান, ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৮৯,৬৩২টি স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে। এই সময়কালে এপ্রিল মাসে ৪৩,৬১১টি, মে মাসে ৫৮,০৪৮টি, জুন মাসে ৭৩,৫৯৩টি এবং জুলাই মাসে এখনও পর্যন্ত ৭৯,৬৫৩টি বিদ্যুৎ বিল জেনারেট হয়েছে।বুধবার আগরতলায় মন্ত্রী জানান, সম্প্রতি কিছু মানুষ বিদ্যুৎ নিগম এবং স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তুলেছেন। এই প্রেক্ষিতে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।মন্ত্রী বলেন গত কয়েকদিনে স্মার্ট মিটার নিয়ে কিছু সমস্যার অভিযোগ সামনে এসেছে।
সেই কারণেই বিদ্যুৎ নিগম -কে নির্দেশ দিয়েছি যাতে এই বিষয়ে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে তদন্ত শুরু করা হয়।তিনি বলেন গতকাল রাতে গঠিত এই টাস্কফোর্সে রয়েছেন চারজন আধিকারিক শিশির দেববর্মা (ডিজিএম), রাজীব কুমার রায় (ডিজিএম), সঞ্জীব নন্দী মজুমদার (সিনিয়র ম্যানেজার) এবং জহর দেববর্মা (সিনিয়র ম্যানেজার)। গ্রাহকদের সুবিধার্থে চালু করা হয়েছে দুটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর— ৬০৩৩১৩১৯৬৬ এবং ৬৯০৯৯৮১২৭৪, যেখানে
শুধুমাত্র স্মার্ট মিটার সংক্রান্ত অভিযোগ পাঠানো যাবে। অন্য ইস্যু গ্রহণ করা হবে না।তিনি জানান, কয়েকদিন আগে খোয়াই জেলার লালছড়া এলাকার বাসিন্দা অশোক কান্তি দাস রায় অভিযোগ করেন যে, স্মার্ট মিটার বসানোর পর তিনি ৮২ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন, যা প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। মন্ত্রীর নির্দেশে পরদিনই তদন্তে নামে বিদ্যুৎ নিগম এবং দেখা যায়, গত ২৫ জুন স্মার্ট মিটার বসানো হলেও তাঁর পুরনো মিটারও চালু ছিল। তদন্তে জানা যায়, এক জন মিটার রিডারের সহায়তায় ওই গ্রাহক দীর্ঘ বছর ধরে ভুয়ো তথ্য জমা দিচ্ছিলেন। স্মার্ট মিটার বসানোর পর প্রকৃত বকেয়া হিসেব করে বিল আসে ৮২,০০০ টাকা।মন্ত্রী বলেন এই ঘটনায় পরিষ্কার হয়েছে যে মিটার রিডার ও গ্রাহক মিলেমিশে রাজস্ব ক্ষতির ষড়যন্ত্র করছিলেন।
তাই, যেই সংস্থা মিটার রিডিংয়ের দায়িত্বে ছিল— M/s TDS Management Consultants Pvt. Ltd. তাদের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গ ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগে শোকজ নোটিশ জারি করা হয়েছে।এ ঘটনায় জড়িত মিটার রিডার ও গ্রাহক এবং গ্রাহক— উভয়ের বিরুদ্ধেই করা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
এই ঘটনার ভিত্তিতে রাজ্যের অন্যত্রও এমন প্রতারণা ঘটে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মন্ত্রী। সেই কারণেই রাজ্যজুড়ে স্মার্ট মিটার বিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হচ্ছে।মন্ত্রী কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা দোষী, তাদের কেউই রেহাই পাবে না।”প্রয়োজনে দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।Still Pic