আগরতলা।।সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে বৃটিশদের শোষণ ও অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে দেশবাসীকে জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি এক নতুন ভারত গড়তে চেয়েছিলেন।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, দেশপ্রেমী। বঙ্কিমচন্দ্র দেশবাসীকে বন্দেমাতরম মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণ। যেটা দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও চেয়েছিলেন। যা আজও প্রাসঙ্গিক। যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় আজ মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তীর শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ক্রীড়ামন্ত্রী সহ অতিথিগণ সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানে ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, আজ দেশের রাষ্ট্রপতি মহিলা, অর্থমন্ত্রী মহিলা। আজ রাজ্যে চার হাজারের অধিক মহিলা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে এখন অনেকে এইচ আই ভি/এইডস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রাজ্যে ৪০টি অনাথ আশ্রম রয়েছে। এই সামাজিক ব্যাধি নির্মলীকরণে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্য ধীরে ধীরে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে। স্বদেশ প্রেম শুধু আবেগ নয়, এক পবিত্র কর্তব্য ও সংগ্রাম। আমাদের দেশ ও রাজ্য তখনই শ্রেষ্ঠ ও আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে যখন আমরা সবাই মিলে সামাজিক ব্যাধি দূর করতে এগিয়ে আসব। অনুষ্ঠানের সভাপতি রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর রচিত ‘আনন্দ মঠ’ উপন্যাসে দেশকে প্রথম মা হিসেবে তুলে ধরেছেন।

স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী ও কর্মধারা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, তাঁর রচিত ‘আনন্দ মঠ’ একটি কালজয়ী উপন্যাস। তাঁর আদর্শ ও চিন্তাধারাকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর ২০২০ সাল থেকে প্রতিটি জেলায় এরূপ অনুষ্ঠানের আয়জন করছে। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নেতাজী সুভাষ মহাবিদ্যালয়ের বিশিষ্ট লেখক ও প্রভাষক ড. প্রণব কুমার দাস। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা (কেন্দ্রীয়) বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার রুমি দেব। উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মবম্বর আলী, ত্রিপুরা হর্টিকালচার কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জওহর সাহা প্রমুখ। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবস পালন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতায় প্রথমস্থান অধিকার করে এমবিবি মহাবিদ্যালয়, দ্বিতীয়স্থান অধিকার করে মহিলা মহাবিদ্যালয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করে সরকারি আর্ট এন্ড ক্র্যাফট মহাবিদ্যালয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে ট্রফি ও শংসাপত্র তুলে দেন অনুষ্ঠানের অতিথিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *