আগরতলা: তপশিলি অংশের মানুষের কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে চলছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। সংবিধান প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরের নীতি ও আদর্শকে পাথেয় করে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে আমাদের সরকার।
আধুনিক ভারতের রূপকার, সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা, ভারতরত্ন ড. বি. আর আম্বেদকরের ১৩৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আজ সকালে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে ড. বি আর আম্বেদকরের মর্মর মূর্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ। তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ১৩৫তম জন্মজয়ন্তীতে আমি ড. বি আর আম্বেদকরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আমরা প্রতি বছরই এই শ্রদ্ধার্ঘ্য কর্মসূচির আয়োজন করি। ত্রিপুরা সরকার তপশিলি অংশের মানুষের কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে চলছে। ড. বি আর আম্বেদকর যে আদর্শ রেখে গেছেন এবং যেভাবে পথচলা দেখিয়েছেন সেই দিশায় আমরা কাজ করছি। এমন একজন দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, সমাজ সংস্কারক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী আমাদের দেশে বিরল। দেশের সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান ব্যক্তি তিনি। দলিত মানুষের জন্য তিনি যেভাবে কাজ করেছেন সেবিষয়ে আমরা সবাই অবগত রয়েছি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আজ ড. বি আর আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকীতে আমাদের আরো বেশি প্রতিজ্ঞা করতে হবে উনার সম্পর্কে অবগত হওয়ার, কিভাবে তিনি মানুষের জন্য কাজ করেছেন সেটা জানার। মধ্যপ্রদেশে মৌ নামক স্থানে সেনাবাহিনীর হেডকোয়ার্টারে একটি ছোট কুটিরে তাঁর জন্ম হয়েছিল। তাঁর পিতা সেনাবাহিনীর একজন সুবেদার ছিলেন। খুবই গরীব পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। সেই জায়গা থেকে এসে সমস্ত ভারতবর্ষের মানুষের কাছে অত্যন্ত পূজনীয় ব্যক্তি হয়েছিলেন তিনি। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত প্রথম আইন মন্ত্রী হিসেবে নেহেরু মন্ত্রিসভায় ছিলেন তিনি। যেভাবে প্রতিকূলতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ, অপমানের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করে গেছেন সেটা আজকের দিনেও স্মরণ করতে হয়। নিপীড়িত মানুষের জন্য যেভাবে তিনি কাজ করেছেন ও লড়াই করেছেন সেটা আজকের দিনেও শিক্ষনীয় বিষয়। শিক্ষা, মেধা ও ক্ষুরধার লেখনী শক্তির অধিকারী ছিলেন ড. বি আর আম্বেদকর। যদিও অনেক দেরিতে ১৯৯০ সালে তাঁকে ভারতরত্ন উপাধি দেওয়া হয়। ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রয়াত হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অংশ হিসেবে বিধানসভা ভবনের সামনে তপশিলি কল্যাণ মন্ত্রীর উদ্যোগে ১১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ড. বি আর আম্বেদকরের ব্রোঞ্জ ও মেটালের পূর্ণবয়ব মর্মর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। আর শুধু তাঁর জন্মবার্ষিকী পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে উনার আদর্শকে সামনে রেখে আমরা আরো কাজ করার চেষ্টা করছি। ছাত্রছাত্রীদের প্রি মেট্রিক, পোস্ট মেট্রিক স্কলারশিপ থেকে শুরু করে যাতে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। মাধ্যমিক পাশ করার পর বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, বিধায়ক কিশোর বর্মণ, বিধায়ক মীনা রাণী সরকার, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব দীপা ডি. নায়ার, দপ্তরের অধিকর্তা জয়ন্ত দে সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।