আগরতলা।। ছাত্রছাত্রীদের গুণগত মানের শিক্ষা প্রদানের জন্য গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। টেট এর মাধ্যমে গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে।

আগামীতে আরো নিয়োগ করা হবে। পুঁথিগত শিক্ষা কখনো একটা জীবনের মানদণ্ড হতে পারে না। পড়াশুনার মাধ্যমে নৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়া যায়। পড়াশুনার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের সামাজিক কাজেও নিয়োজিত করতে হবে। আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ‘ত্রিপুরা স্কুল কোয়ালিটি এসেসমেন্ট এন্ড এক্রিডিটেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ (TSQAAF)- এর সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, সময়ের সাথে সাযুজ্য রেখে কাজ করছে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর। আগামী প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়িত করা হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় গতি আনতে জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কারণ সব জায়গায় এক ধরণের পাঠক্রম চালু থাকলে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা হয় না। অভিন্ন প্রশ্নপত্র হলে আমাদের ছেলেমেয়েরাও কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিযোগিতায় নামতে পারছে।আজ ত্রিপুরা স্কুল কোয়ালিটি এসেসমেন্ট এন্ড এক্রিডিটেশন ফ্রেমওয়ার্ক সূচনার মধ্য দিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এর মাধ্যমে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা দেশের অন্যান্য অংশের ছেলেমেয়েদের সাথে সমসাময়িক পর্যায়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা স্কুল কোয়ালিটি এসেসমেন্ট এন্ড এক্রিডিটেশন ফ্রেমওয়ার্ক এর মাধ্যমে প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার মানদণ্ড নিরূপন করা যাবে। আর সেই অনুযায়ী স্বীকৃতি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে শিক্ষক শিক্ষিকাদের গতানুগতিক ধারার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না।

নির্দিষ্ট সিলেবাসের বাইরেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পাঠদান করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনাকে কার্যকর করতে হবে। তিনি বারবার বলছেন যে শুধু পাঠ্যবই পড়লে হবে না। ছেলেমেয়েদের মধ্যে মূল্যবোধ, বিকাশ ও জাতি গঠনের ভাবনা গড়ে তুলতে হবে। আর আজ চালু হওয়া এই নয়া পদ্ধতির মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের মধ্যে সেই ভাবনা চিন্তা চলে আসবে। এই কারিকুলাম তৈরির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিক্ষা ক্ষেত্রে ভারতকে আবারো বিশ্বগুরুর ভূমিকায় অবতীর্ণ করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। শিক্ষকরা যেভাবে ছাত্রছাত্রীদের গড়ে তুলবেন সেভাবেই তারা গড়ে উঠবে। তিনি বলেন, গত ২৩ জুন দেশের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে পূর্ণ সাক্ষর রাজ্যের স্বীকৃতি অর্জন করেছে ত্রিপুরা। মোট ৯৫.৬% সাক্ষরতা নিয়ে মিজোরাম ও গোয়ার পর এই মর্যাদা পেয়েছে আমাদের রাজ্য। ডাঃ সাহা বলেন, শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞান বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থ সামাজিক অবস্থার মান উন্নয়নেও বিশেষ ভূমিকা রাখা যায়। অনেক ছেলেমেয়ে

পড়াশুনায় ভালো হলেও জীবনে সফল হতে পারে না। তাই পড়াশুনার সাথে সাথে খেলাধুলা, সামাজিক কাজ সহ অন্যান্য কর্মকান্ডে যুক্ত থাকা প্রয়োজন। শিক্ষকদের দায়িত্ব ছাত্রছাত্রীদের সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। স্কুলেই সামাজিক সমস্যা ও তার সমাধানের শিক্ষা দিতে হবে তাদের। শিক্ষার দিগন্তকে আরো প্রসার করতে হবে।

পরীক্ষার সময়ে ছেলেমেয়েদের চাপ কমাতে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ কার্যক্রম করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়নে শিক্ষা দপ্তর বিভিন্ন নীতি ও কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। রাজ্যের স্কুল কলেজগুলিতে জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু করা হয়েছে। সিএম সাথ প্রকল্পে প্রায় ২০০ জন ছাত্রছাত্রীকে ৭,০০০ টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনায় ১৪০ জন ছাত্রীকে বিনামূল্যে স্কুটি দেওয়া হয়েছে। সাধারণ কলেজগুলিতে ছাত্রীদের সমস্ত ধরণের ফি মকুব করা হয়েছে। গুণগত শিক্ষা প্রদানের জন্য গুণমান সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, শিক্ষা অধিকর্তা এন সি শর্মা, এসবিআই ফাউন্ডেশনের সিইও সঞ্জয় প্রকাশ সহ শিক্ষা দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিক এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *