আগরতলা: রাজ্যে ধান উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হাইব্রিড ধান চাষে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর। ২০২৫–২৬ খরিফ মরসুমে ২৫,২০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ , সিমনা বিধানসভা কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানিয়েছেন ত্রিপুরা রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী রতন লাল নাথ।এদিন তিনি নিজেই ধানের চারা রোপণ করে চাষিদের ও নতুন প্রজন্মের মধ্যে উৎসাহ যোগান।মন্ত্রী জানান, ২০২৪–২৫ সালে রাজ্যে মোট ৩৫,০০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে খরিফ মরসুমে ৮,৬৩০ হেক্টর এবং রবি মরসুমে ২৬,৩৭০ হেক্টর জমিতে এই চাষ হয়েছে।তিনি জানান বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৩০ লাখ কানি জমিতে বিভিন্ন উদ্যানতাত্ত্বিক ফসলের চাষ হয় এবং প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ কানি জমিতে ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে ৯.০১ লাখ কানি জমিতে আমন ধান, ৩.৯৪ লাখ কানি জমিতে বোরো ধান এবং প্রায় ৮৫ হাজার কানি জমিতে ঝুম চাষ হয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, রাজ্যের ৫৮টি ব্লকের মধ্যে বর্তমানে ৩০টি ব্লক এবং দক্ষিণ, গোমতি ও সিপাহীজলা এই তিনটি জেলা খাদ্য উৎপাদনে আত্মনির্ভর হয়েছে।কৃষি মন্ত্রী বলেন চালের ঘাটতি মেটাতে আমরা SRI পদ্ধতির মাধ্যমে হাইব্রিড ধান চাষে জোর দিচ্ছি। ২০ দিনের চারা লাগাতে হবে, তার বেশি হলে চলবে না। এই পদ্ধতিতে কানি প্রতি ৮০ কেজি ফলন বাড়ানো সম্ভব হয়।মন্ত্রী জানান, ২০১৭–১৮ অর্থবর্ষে রাজ্যে চালের চাহিদা ছিল ৮.২৬ লাখ মেট্রিক টন, যখন জনসংখ্যা ছিল ৩৯.৭৫ লাখ। উৎপাদন হয়েছিল ৭.৭০ লাখ মেট্রিক টন, ফলে ৫৬,০০০ মেট্রিক টনের ঘাটতি ছিল। বর্তমানে (২০২৪–২৫) জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২.২২ লাখ, চাহিদা ৮.৭৭ লাখ মেট্রিক টন এবং উৎপাদন হয়েছে ৮.৩০ লাখ মেট্রিক টন ঘাটতি প্রায় ৪৭,০০০ মেট্রিক টন।এই ঘাটতি পূরণে রাজ্য সরকার হাইব্রিড ধান চাষে কৃষকদের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন সরকার নির্ধারিত নিয়মে কেউ হাইব্রিড ধান চাষ করলে আমরা অর্থ সাহায্য, সার ও অন্যান্য উপকরণ দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য চাষিদের আয় বৃদ্ধি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চান ভারত যেন খাদ্যশস্যের গ্লোবাল হাব হয়। বিশ্বের অন্য কোনো দেশ ভারতের মতো চাল রফতানি করতে পারে না।তিনি আরও বলেন ভারতের মেরুদণ্ড কৃষি। আমি নিজে ধান রোপণ করেছি যাতে কৃষকদের মধ্যে অনুপ্রেরণা জাগে। কৃষি, মৎস্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে লাখ লাখ টাকা রোজগারের সুযোগ রয়েছে।