আগরতলা।।আসিড পান করায় খাদ্যনালী জ্বলে শুকিয়ে গিয়েছিলো ২৩ বছরের এক যুবকের। খাওয়া দাওয়া করতে পারছিলো না। সেই রোগীর খাদ্যনালিতে জটিল অস্ত্রোপচার করে সাফল্য পেলো জিবি হাসপাতালের ডাক্তাররা।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের তরফে ডাক্তাররা এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানান। রোগী অনেকটা সুস্থ হওয়ায় এখন খুশি তার পরিবার। সিপাহীজলার কৈয়াঢেপা মধুপুরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দাস, বয়স ২৩।। গত বছর মার্চ মাসে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে রাবার প্রসেসিং এর অ্যাসিড খেয়ে নেয় ।। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মধুপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে দেখা যায় অ্যাসিড খাওয়ার পর তার খাদ্যনালী জ্বলে যাওয়াতে খাদ্যনালী শুকিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে।। গত দেড় বছর ধরে সে ঠিক ভাবে কিছু খেতে পারছিল না ।।
গত ৩ জুন বাড়ির লোক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসে। গ্যাস্ট্রোএন্টরোলজিস্ট ডাঃ মৃণাল দেববর্মা ও ডাঃ শুভদীপ পাল তার এন্ডোস্কোপি করে খাদ্যনালীর স্ট্রিকচার সনাক্ত করেন। তারপর তাকে গ্যাস্ট্রো সার্জারি ডিপার্টমেন্টে ডাঃ দীপংকর শংকর মিত্রের কাছে চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয় । ডাঃ মিত্র এই জটিল রোগীর ব্যাপারে হাসপাতালের কার্ডিওথোরসিক সার্জন ডাঃ কনক নারায়ণ ভট্টাচার্যের সাথে আলোচনা করেন। সিদ্ধান্ত হয় রোগীর শুকিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া খাদ্যনালীর বিকল্প পথ তৈরী করা হবে। রোগীর বৃহদন্ত্রের একটি অংশ কেটে নিয়ে খাদ্যনালীর জায়গায় বুকের ভেতর প্রতিস্থাপিত করা হয় । এই অপারেশন জিবি হাসপাতাল তথা ত্রিপুরা রাজ্যে প্রথমবার করা হয়। গত ৫ জুন হয় অস্ত্রোপচার। দীর্ঘ সাত ঘন্টা ব্যাপী এই অস্ত্রোপচার চলে। বর্তমানে রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল, সুস্থ হওয়ার পথে। ধীরে ধীরে একটু একটু করে রোগী তরল খাদ্য খেতে পারছে। বৃহস্পতিবার জিবি হাসপাতালে ডাক্তারদের টিম পুরো ঘটনা তুলে ধরেন।
এ ধরনের অপারেশন জিবিপি হাসপাতালে প্রথম ও সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট রোগীর পরিবারের লোকজন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা খুশি। এই জটিল অস্ত্রোপচার প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা প্রকল্পে সম্পন্ন হওয়ায় রোগী সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পায় ।