আগরতলা।।কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নে দেশের মধ্যে বাছাই করা ১০০টি জেলার মধ্যে স্থান পেয়েছে উত্তর ত্রিপুরা জেলা। এসকল নির্বাচিত জেলার কৃষকদের দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্কিমের সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ফসলের বৈচিত্র্যকরণ, টেকসই কৃষি পদ্ধতির প্রসার করা। আজ এডি নগরের স্টেট এগ্রিকালচার রিসার্চ স্টেশনে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে বিভিন্ন কৃষি কল্যাণ প্রকল্পের সূচনা পর্বের রাজ্যভিত্তিক সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজ একটা ঐতিহাসিক দিনে এই কার্যক্রমের শুভ সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ আমাদের দুজন ভারত রত্ন জয় প্রকাশ নারায়ণ ও নানাজী দেশমুখের জন্মজয়ন্তী। মানুষকে কিভাবে সম্মান দিতে হয় সেটা আমাদের যশস্বী প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শেখা উচিত। কৃষকদের জীবন মান উন্নয়ন করার লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি।
আজ ধনধান্য কৃষি যোজনা, ন্যাশনাল মিশন অন ন্যাচারাল ফার্মিং ও ডলহন আত্মনির্ভরতা মিশন – এই দুটি স্কিমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পগুলি বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে কৃষি ও সহযোগী ক্ষেত্রগুলিতে নতুন গতি আনবে এবং কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত ভাই-বোনদের জীবনমান উন্নত করতে সহায়ক হবে। এজন্য ত্রিপুরার মানুষ ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে জিএসটি ৪/৫টি পর্যায়ে ছিল। সেই জায়গায় এখন ৫% ও ১৮% করা হয়েছে। এরফলে কৃষকদের কৃষিজাত বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দামও কমেছে। প্রায় ৪০% আমাদের শস্য উৎপাদন বেড়েছে। আজ কৃষকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে ৪২,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সারা দেশের ১০০টি জেলাকে বাছাই করা হয়েছে।
এরমধ্যে রাজ্যের উত্তর জেলাকেও নির্বাচন করা হয়েছে। মূলত, উৎপাদনশীলতা, জলসেচ ব্যবস্থা, কৃষি ঋণের সুযোগ প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে এসকল জেলাগুলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প ২০২৫ – ২৬ থেকে ২০৩০ – ৩১ পর্যন্ত চলবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, রাজ্যের কৃষি ক্ষেত্রকে উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের কৃষি মন্ত্রী নিরলসভাবে কাজ করছেন। প্রত্যেক মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিগণ পরিশ্রম করছেন। এতে সব জায়গায় কাজের গতি বাড়ছে। এই প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ভর্তুকি, পরিকাঠামো, কৃষি ঋণ, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ফসলের বাজারজাত করণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আমাদের রাজ্যে খাদ্য শস্যের গড় উৎপাদন প্রতি হেক্টরে বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলা এক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে থাকায় এই জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এতে লাভবান হবেন উত্তর জেলার কৃষকরা। ব্লক ও গ্রাম স্তরে ফসল গুদামজাত করণের সুব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে জলসেচ ব্যবস্থা উন্নত করাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ, বিধায়ক মীনা রাণী সরকার, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিত শীল, কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও পদস্থ আধিকারিকগণ।