আগরতলা।।কৃষির উৎপাদন বাড়াতে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে প্রচারাভিযান। বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান শুরু হতে চলেছে সারা দেশে। রাজ্যে তা চলবে ২৯ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে রাজ্যের ১ লক্ষ ৭২ হাজার কৃষকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে সরকার। জানালেন কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
শনিবার এই বিষয়ে প্রস্তুতি কমিটির বৈঠক হয়। কৃষি হচ্ছে দেশের মূল ভিত্তি। তাই কৃষিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে বর্তমান সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও সমান গুরুত্ব দিয়েছে কৃষিতে। আগামী ২৯মে থেকে রাজ্যব্যাপী শুরু হচ্ছে বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান কর্মসূচি। তা চলবে ১২জুন পর্যন্ত। এই কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে শনিবার আগরতলার এডি নগর এলাকার স্টেট এগ্রিকালচার স্টেশনের কনফারেন্স হলে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। তাতে উপস্থিত ছিলেন কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ, রাজ্য ফার্মাস ক্লাবের সভাপতি প্রদীপ বরণ রায়, এডিসির কৃষি দপ্তরের কার্যনির্বাহী সদস্য ভবরঞ্জন রিয়াং, কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ড: ফনি ভূষণ জামাতিয়া, স্টেট এগ্রিকালচার রিসার্চ স্টেশনের প্রধান ডঃ উত্তম সাহা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
রাজ্যের আটটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি সহ-সভাপতি সহ অন্যান্য নির্বাচিত সদস্যরা। সেই সঙ্গে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর, মৎস্য দপ্তর সহ অন্যান্য লাইন দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন মৎস্য , প্রাণী সম্পদ ও কৃষি কলেজের প্রতিনিধিরা। এই সংকল্প যাত্রার কর্মসূচি হিসেবে কি কি কাজ করা হবে, কোথায় কোথায় এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে, কারা এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন এই সমস্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে ।
কৃষি মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ২৯ মে রাজ্যের চব্বিশটি জায়গাতে একই সঙ্গে এই কর্মসূচির সূচনা করা হবে। তিন দফায় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। কৃষকদের সুবিধা সম্বলিত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে পত্র তুলে ধরার জন্য মোবাইল ডিসপ্লে ভ্যান বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখাবে। পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা গবেষণাগার রাখা হবে এই কর্মসূচি গুলিতে। কৃষকদের বুঝার সুবিধার জন্য বাংলা ও ককবরক ভাষায় আধিকারিকরা কথা বলবেন। কৃষি সুবিধা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হবে। দল-মত নির্বিশেষে সকল কৃষক এবং জনপ্রতিনিধিদেরকে এই কর্মসূচিতে উপস্থিত রাখা হবে বলেও জানান। সব মিলিয়ে কর্মসূচিকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলার লক্ষ্যে এদিনের এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। মন্ত্রী রতন লাল নাথ জানান, রাজ্যের ৮৬৪ টি জায়গায় আলোচনা সভা হবে। রোজ ৭২টি আলোচনাসভা হবে। এর মাধ্যমে ১ লক্ষ ৭২ হাজার কৃষকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কিভাবে কৃষিকাজ করে কৃষির উৎপাদন বাড়ানো যায়, কৃষকদের সুবাদে, অসুবিধা, কি ভাবে কৃষিতে আত্মনির্ভর হওয়া যাবে, খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদান সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকগুলোতে।
এদিন প্রস্তুতি বৈঠকের পাশাপাশি স্টেট এগ্রিকালচার রিসার্চ স্টেশনের যে প্রাকৃতিক কৃষি করা হচ্ছে এই বিষয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখান ডক্টর উত্তম সাহা। সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতির একটি প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়। মন্ত্রি সহ উপস্থিত অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকরাতা ঘুরে দেখেন। গবেষণা কেন্দ্রের মাঠে প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতিতে চাষবাস করা হচ্ছে। সকলে এই কৃষির মাঠ ঘুরে দেখেন। কিভাবে স্বল্প খরচে গুণমান সম্পন্ন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব প্রাকৃতিক কৃষির মাধ্যমে তা দেখে প্রত্যেকেই অভিভূত।