কুমারঘাট।।কুমারঘাট পুর পরিষদের বর্তমান বোর্ডের সময়কালে ১ জানুয়ারি, ২০২২ থেকে এবছরের জুন মাস পর্যন্ত নাগরিক পরিষেবা সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে এখন পর্যন্ত ১৮ কোটি ৯২ লক্ষ ১৬৮ টাকা ব্যয় হয়েছে।

আজ কুমারঘাট পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন বিশ্বজিৎ দাস তাঁর অফিস কক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ সংবাদ জানিয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুর পারিষদ হিমাংশু দাস ও ডেপুটি সিইও শুভঙ্কর সেন। উন্নয়নের কাজের মধ্যে রয়েছে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং স্ট্রাকচার নির্মাণ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, অত্যাধুনিক শৌচালয় নির্মাণ, ক্ষুদ্র পথ ব্যবসায়ীদের জন্য স্টল বসানো, রিং ওয়েল খনন, মনিষীদের মূর্তির বেস নির্মাণ, শাশান ঘাটের সংস্কার, স্মল বোর নির্মাণ, ড্রেনের উপর লোহার ঢাকনা তৈরী, রাস্তার পরিচিতির জন্য সাইন বোর্ড তৈরী, রাস্তার বিভিন্ন মোরে জরুরী পরিষেবার ফোন নম্বরের ডিসপ্লে বোর্ড তৈরী, স্টিল ব্রীজ নির্মাণ, বৈদ্যুতিন শ্মশান ঘাটের জায়গার উন্নয়ন, ড্রেনের উপর ঢাকনা ও ছড়ার পাড় বাধানো, সোনামুখীতে টার্শিয়ারী সেন্টার নির্মাণ, গীতাঞ্জলী অডিটোরিয়াম নির্মাণ, পাকা ড্রেইন ও রাস্তা নির্মাণের মতো কাজ।

এছাড়া পুর এলাকায় বর্তমানে আনুমানিক ৪ কোটি ৫১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫৯৬ টাকা ব্যয়ে বৈদ্যুতিন শ্মশান ঘাট নির্মাণ, ৪টি পিঙ্ক টয়লেট নির্মাণ, জলাশয়ের সংস্কার ও আশপাশ এলাকা সৌন্দর্যায়ণ ও ১টি পাকা ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। পাশাপাশি উন্নয়নের কাজে আগামীর পরিকল্পনায় রয়েছে টার্শিয়ারি সেন্টারে কম্পোষ্ট পিট নির্মাণ, আরও পাকা রাস্তা ও ড্রেইন নির্মাণ, কুমারঘাট রেল স্টেশন চৌমুহনী থেকে উত্তর পাবিয়াছড়ায় ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী লেন পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণ, শহর সৌন্দর্যায়ণ, কুমারঘাটের দশমীঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের সুবিধার জন্য লোহার র‍্যাম্প নির্মাণ, লাইটিং ট্রাফিক সিগনাল সিস্টেম স্থাপন, ১টি অত্যাধুনিক পাবলিক লাইব্রেরী নির্মাণ ও ৩টি ওয়ার্ড অফিস নির্মাণের কাজ করা। উল্লেখিত উন্নয়ন কাজের জন্য ইতিমধ্যে ১ কোটি ৪১ লক্ষ ৯ হাজার ৪৩৮ টাকার টেন্ডার ডাকা হয়েছে বলেও চেয়ারপার্সন বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, কুমারঘাট পুর এলাকায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (শহর) ৫১৭ টি পরিবারে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৩৯৫০ টি পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। শৌচালয় নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে ১৩১টি পরিবারে। পুর এলাকায় বর্তমান বোর্ডের সময়কালে এখন পর্যন্ত টুয়েপ প্রকল্পে মোট ৭৫,৩৫৭ শ্রমদিবস কাজ দেওয়া হয়েছে যা গড়ে ৭৬ দিনের কাজ হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৪১ হাজার ৪৫ টাকা। এছাড়া পিএম অজয় প্রকল্পে ৩৭ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে প্রথম কিস্তিতে ২০ হাজার টাকা করে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তিতে আরও ৩০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হবে। অন্যদিকে দীনদয়াল উপাধ্যায় জাতীয় শহুরী জীবিকা মিশনে ৯২টি নতুন স্বসহায়ক দল গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৬টি স্বসহায়ক দলকে ১০ হাজার টাকা করে রিভলভিং ফান্ড দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে ১১৮টি স্বসহায়ক দলকে ১ লক্ষ টাকা করে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। পুর এলাকার ৫৬ জন বেকার যুবক যুবতীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

এই সময়কালে পুর এলাকার ৪১৪ জন স্ট্রিট ভেন্ডারকে ১০ হাজার, ২০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা করে ব্যবসার জন্য ঋণ প্রদান করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে চেয়ারপার্সন বিশ্বজিৎ দাস কুমারঘাট পুর এলাকায় এই বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ত্রিপুরার প্রতি তাঁর ইতিবাচক নজর আছে বলেই এই উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্ভব হয়েছে।

পাশাপাশি তিনি বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাসকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন উন্নয়নের প্রকল্পগুলি পেতে তার অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য। তিনি আরও জানান, এডিবি’র অর্থে আগামী দিনে সকল পুরবাসীর বাড়িতে নলের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হবে। পুরবাসীদের তিনি শহরকে সুন্দর ও নির্মল রাখতে এগিয়ে আসতেও আহ্বান জানান।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *