আগরতলা।।গত ৭ বছরে রাজ্যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি চক্ষু চিকিৎসার জন্য আগরতলায় ১০০ শয্যাবিশিষ্ট রিজিওন্যাল টার্শিয়ারি চক্ষু হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। যার জন্য বাজেটে অর্থ সংস্থানও রাখা হয়েছে।
শুক্রবার আগরতলায় আইএলএস হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আধুনিক চিকিৎসা সম্বলিত ক্যান্সার কেয়ার সেন্টারের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। আগরতলার আইএলএস হাসপাতাল ইন্টারন্যাশনাল অঙ্কোলজি ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় এই আধুনিকমানের ক্যান্সার কেয়ার সেন্টারটি চালু করেছে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যান্সার দূরারোগ্য ব্যাধি হলেও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে দ্রুত এই রোগ নির্ণয় ও সঠিক সময়ে চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। জনসচেতনতাই ক্যান্সারের সঙ্গে মোকাবিলা করার অন্যতম উপায় বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন। ধূমপান, তামাক ও নেশা সামগ্রী ব্যবহার ক্যাম্পারের অন্যতম কারণ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচিতে প্রতি সপ্তাহে চিকিৎসায় সহায়তার জন্য অনেকেই আবেদন জানান। দেখা গেছে, ক্যান্সার আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীদেরই বহিরাজ্যে মুম্বাই-এ বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাবার প্রবণতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রোগী ও তাদের সহযোগীদের সুবিধার্থে মুম্বাইতে রাজ্য সরকার একটি জায়গা চিহ্নিত করে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে রাজোই এখন সব ধরণের রোগের চিকিৎসা পরিষেবা সহজতর হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে আইএলএস হাসপাতালে ক্যান্সার কেয়ার সেন্টার স্থাপন রাজ্যে ক্যান্সার চিকিৎসার সুযোগকে আরও সহজতর করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।
চিকিৎসা পরিষেবা ও রাজ্যের ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও আইএলএস হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় রাজ্যের অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার সেন্টার ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের পর এই হাসপাতালের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতালে প্যাট স্ক্যান, এম আর আই, সিটি স্ক্যান ইত্যাদি অত্যাধুনিক চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়। রেডিওথেরাপি পরিষেবাও দেওয়া হচ্ছে। অত্যাধুনিক চিকিৎসার জন্য ক্যাপাসিটি বিল্ডিং-এ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার সেন্টারে রেডিয়েশন অঙ্কোলজি, সার্জিক্যাল অঙ্কোলজি, মেডিক্যাল অঙ্কোলজি, পেডিয়াট্রিক অঙ্কোলজি, প্যালিয়াটিভকেয়ার সহ ৯ ধরণের আধুনিক চিকিৎসা পরিসেবার কথাও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাজ্যে প্রায় ৪০০ জন ছাত্রছাত্রীর এমবিবিএস কোর্সে পড়াশুনা করার সুযোগ রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি এইমস-এর অধিকর্তা প্রফেসর (ডা) এম শ্রীনিবাস এর নেতৃত্বে ৪ সদস্যের চিকিৎসকদের এক প্রতিনিধিদল রাজ্য সফর করেছেন। প্রতিনিধিদলটির পরামর্শক্রমে রাজ্যে হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট খোলার বিষয়ে সরকার গুরুত্বারোপ করছে। এজিএমসি ও জিবি হাসপাতালে সাফল্যের সঙ্গে ২টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। লিভার প্রতিস্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বহিরাজ্য থেকে বিনিয়োগকারীরা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইএলএস হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাঃ ওম তাঁতীয়া। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল অঙ্কোলজি ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ মধুর গর্গ। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল অঙ্কোলজি ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের এক্সকিউটিভ ডিরেক্টর ডাঃ প্রমোদ কুমার শর্মা