আগরতলা: ত্রিপুরা রাজ্যে একটি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের চেষ্টা করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। এজন্য রাজ্যের বাইরে থেকে আসা বিনিয়োগকারীদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রসারে রাজ্যে আরও হোমিওপ্যাথি ডাক্তার নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

                          
বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত রাজ্য স্তরের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
                          অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান ছিলেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রাণপুরুষ। তিনি ছিলেন একজন জার্মান ফিজিশিয়ান। আলটারনেটিভ মেডিসিন প্র্যাকটিস হিসেবে তাঁর থেকেই শুরু হয়েছিল এই হোমিওপ্যাথি। এবারের থিমটাও খুব ভালো। অধ্যয়ন, শিক্ষাদান এবং গবেষণা। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আর অনেক সুচিন্তিতভাবে এই থিমটা এবার রাখা হয়েছে। কারণ এই চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে হলে অধ্যয়ন, শিক্ষাদান এবং গবেষণা - তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সম্পর্কে এখনও অনেক মানুষ অবগত নন। 
                    
মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, রাজ্য সরকার এখানে একটা হোমিওপ্যাথি কলেজ গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছে। আমি নিজেও স্টেট হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। বাইরে থেকেও বিনিয়োগকারীরা আসছেন। আমরা তাদেরও হোমিওপ্যাথি কলেজ স্থাপনের জন্য উৎসাহিত করছি। ভারতবর্ষে হোমিওপ্যাথির আদি স্থান হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। সেখান থেকে ধীরে ধীরে দেশের অন্যান্য জায়গায় হোমিওপ্যাথির প্রচার ও প্রসার ঘটেছে। আমাদের চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচার ও প্রসার খুবই প্রয়োজন। কোন জায়গায় সাফল্যের বিষয় থাকলে সেগুলি সামনে নিয়ে আসা উচিত। তাই রাজ্যেও হোমিওপ্যাথির আরো প্রচার ও প্রসার প্রয়োজন রয়েছে। অনেক হোমিওপ্যাথি ডাক্তার রয়েছেন, যারা রাজ্যে ভাল নাম অর্জন করেছেন। তবে এসব সাফল্যের গল্প সম্পর্কে অবগত নন অনেকে। 
                             মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে পারে না, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক। এমন অনেক রোগী রয়েছেন যাদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না। সেটা হোমিওপ্যাথির কারণে নিরাময় সম্ভব। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর হোমিওপ্যাথির উপর ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। যেটা বহু বছর ধরে অবহেলিত ছিল। হোমিওপ্যাথির পাশাপাশি ইউনানী ও আয়ুর্বেদ আয়ুষের আওতায় আসে। হোমিওপ্যাথির ওষুধগুলির কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া নেই। আমাদের জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। আমরা আশাবাদী যে আগামী দিনগুলিতে আমরা এই বিষয়গুলি জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারবো।
                       
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা জানান, রাজ্যে হোমিওপ্যাথি মেডিকেল অফিসারদের সংখ্যা এখন ১৭৩ জন। আমরা আশাবাদী যে আরও হোমিওপ্যাথি ডাক্তার নিয়োগ করা হবে। সাব্রুম মহকুমায় আরও একটি ইন্টিগ্রেটেড আয়ুষ হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রগতি লাভ করেছে। আমরা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার উন্নয়নের জন্যও কাজ করছি। 

                                অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, অতিরিক্ত সচিব রাজীব দত্ত, দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ তপন মজুমদার, মেডিকেল এডুকেশনের অধিকর্তা প্রফেসর ডাঃ এইচ পি শর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ অঞ্জন দাস, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের যুগ্ম অধিকর্তা অরূপ দেব সহ অন্যান্য বিশিষ্ট চিকিৎসকগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *