আগরতলা।।মানসিক চাপ ও অবসাদ থেকে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে হলে যোগা আমাদের খুবই প্রয়োজন। যোগার প্রসার আরো বৃদ্ধি করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। নিয়মিত যোগা চর্চা করলে শরীর ও মনকে মজবুত করা যায়। এর পাশাপাশি এইচআইভি/ এইডস প্রতিরোধে সবাই মিলে একটা গণআন্দোলন প্রয়োজন।

আজ হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী মিলনায়তনে রাজ্যভিত্তিক ১১তম আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তর এবং ন্যাশনাল আয়ুষ মিশনের যৌথ উদ্যোগে আজ ১১তম আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। গতবছরও এই জায়গায় যোগা দিবস পালন করা হয়েছে। আজ সারা রাজ্যে একযোগে যোগা দিবস পালন করা হচ্ছে। আমরা সবাই জানি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইউনাইটেড ন্যাশন্সের জেনারেল এসেম্বলিতে ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস হিসেবে উদযাপন করার প্রস্তাব রাখেন। একযোগে প্রায় ১৭৭টি দেশ তাঁর প্রস্তাবকে সমর্থন করে। তারপর ২০১৫ সালের ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালন করা শুরু হয়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ভারতবর্ষে যুগ যুগ ধরে মুনি ঋষিগণ যোগা ব্যায়াম চর্চা করে আসছেন। যোগার মাধ্যমে আমরা নিজেকে চিনতে পারি, জানতে পারি। কথিত আছে, মহাদেব হলেন যোগার আদিগুরু। আর সেই বিষয়কে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালন করা শুরু হয়। অন্যান্য দেশও এখন যোগা অনুসরণ করছে। শুধু আমেরিকা ও চিনে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার যোগা সেন্টার রয়েছে, যেখানে নিয়মিত যোগার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যোগা আমাদের সুস্থ মন ও সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার পথ দেখায়। নিয়মিত যোগা চর্চার মাধ্যমে শরীর ও মন মজবুত থাকে। আর যুগ যুগ ধরে মুনি ঋষিগণ যে যোগাভ্যাস করে গেছেন সেটারও পুনুরুদ্ধার করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যবান মার্গদর্শন ও নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।

ডাঃ সাহা বলেন, মোবাইল ইন্টারনেটে ব্যস্ত থাকায় এখনকার ছেলেমেয়েদের যোগার প্রতি আকর্ষণ অনেকটাই কম হয়েছে। তাই ছাত্রছাত্রীদের বলবো তারা যাতে নিয়মিত যোগা চর্চা করে। কারণ যোগা ব্যায়ামের কোন বয়স থাকে না। নিয়মিত যোগা চর্চা করলে শরীর ঠিক রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকেও মুক্ত থাকা যায়। মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আধুনিক যুগে সবাই প্রায় নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এতে যে চাপ ও অবসাদ আসে, সেখান থেকে বাঁচতে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে যোগা খুবই প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যোগা দিবসে আমি সবার কাছে আহ্বান রাখবো যাতে এইচআইভি/ এইডস নিয়ে আরো সতর্ক থাকতে হবে। এবিষয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এখন এধরণের প্রবনতা ধরা পড়ছে। এর বিরুদ্ধে একটা গণআন্দোলন প্রয়োজন। এই ভাইরাস শরীরে একবার প্রবেশ করলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আর সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে সমস্যা দেখা দেয়। তাই এর বিরুদ্ধে সবাইকে আরো সতর্ক হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, বিধায়ক মীনা রাণী সরকার, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা এস বি নাথ, পদ্মশ্রী জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ। পরে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ যোগা চর্চা করেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *