আগরতলা : বিদ্যুৎ খাতে আধুনিকীকরণ ও স্বচ্ছতা আনতে ত্রিপুরা সরকার শীঘ্রই ড্রোন ব্যবহার করে রাজ্য জুড়ে বিদ্যুৎ চুরি ও অবৈধ হুকলাইন ব্যবহার শনাক্ত করবে।

শুক্রবার পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সেকেরকোটে ৩৩ কিলোভোল্টের বিদ্যুৎ সাবস্টেশন উদ্বোধন করতে গিয়ে এই ঘোষণা দেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই সাবস্টেশন চালু হওয়ায় সেকেরকোট ও আশেপাশের এলাকার বাসিন্দাদের বিদ্যুতের গুণগত মান ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, “এই সাবস্টেশন চালু হওয়ায় সেকেরকোট, বিক্রমনগর, চৌমুহানী বাজার, কাঞ্চনমালা, গোকুলনগর, চাম্পামুড়া, ফুলতলি ও পাণ্ডবপুরের কিছু অংশের বাসিন্দারা এখন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন।” ঝড়ের সময় ঘনঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগের জবাবে তিনি বলেন, “অনেকে মনে করেন ঝড়ের সময় ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ চলে যায়, কিন্তু বাস্তবে আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিই।

ওড়িশার মতো রাজ্যে বেশি ঝড় হয়, কিন্তু তারা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে—আমরাও সেই দিকে এগোচ্ছি।” ত্রিপুরার বিদ্যুৎ উৎপাদনের উৎস নিয়ে মন্ত্রী জানান, রাজ্য মূলত গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। তবে গ্যাসের মজুদ কমে আসায় সরকার এখন সৌরশক্তির মতো নবায়নযোগ্য উৎসের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। “আগে ত্রিপুরা মাত্র ৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করত, এখন আমরা ২৮ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করছি,” বলেন তিনি। মন্ত্রী নাগরিকদের ‘প্রধানমন্ত্রী মুফৎ বিদ্যুৎ যোজনা’-র সুবিধা নেওয়ারও আহ্বান জানান, যা সৌর প্যানেল স্থাপনে ভর্তুকি, ঋণ ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে।”এটি বিদ্যুৎ বিল কমাবে, বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আয়েরও সুযোগ দেবে,” বলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী । বিদ্যুৎ চুরি রোধে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমরা অবৈধ হুকলাইন শনাক্ত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি, এবং জনসাধারণও সহযোগিতা করছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ‘সৌভাগ্য যোজনা’-র অধীনে ১.৩৬ লক্ষের বেশি বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।”তিনি আরও বলেন, “গত সাত বছরে আমরা বিনামূল্যে বাসস্থান, রেশন ও জল সংযোগ দিয়েছি। আগের সরকারগুলোর আমলে এগুলো ছিল না।

আজ নাগরিকরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ ভিশনের সুবিধা পাচ্ছেন।”শেষে তিনি নাগরিকদের সময়মতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ও চুরি ও অপচয় রোধে সরকারকে সহায়তা করার আবেদন জানান। “আমরা আগামী দিনগুলোতে ত্রিপুরার বিদ্যুৎ খাতকে ভবিষ্যত-প্রস্তুত করতে আরও উন্নত প্রযুক্তি আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।বিদ্যুৎ চুরি ও অবৈধ হুকলাইন রোধে ড্রোন ব্যবহার করবে সরকার,” বলেন মন্ত্রী।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *