আগরতলা।। পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রখর রাজনীতিবিদ এবং দেশপ্রেমিক। ভারতের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, পরম্পরা, মানুষের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন তিনি। তাঁর নির্দেশিত দিশায় এগিয়ে চলছে দেশ ও রাজ্য।

আজ আগরতলার মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে একাত্ম মানববাদের প্রণেতা পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে প্রতি বছরই এই কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রখর রাজনীতিবিদ এবং দেশপ্রেমিক। দেশের জন্যই বলিদান হয়েছেন তিনি। কিন্তু এসব বিষয় আগে জানতে দেওয়া হয়নি। পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় সম্পর্কে যে যত বেশি জানতে পারবে ততোই তার পরিণত মনস্ক ভাব আসবে। আমাদের ভারতবর্ষে অনেক লিজেন্ড ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যারা কম বয়সে অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। যাঁদের এখনো আমরা স্মরণ করি। যেমন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, স্বামী বিবেকানন্দ খুব অল্প বয়সে প্রয়াত হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা যে চিন্তাচেতনা রেখে গিয়েছেন সেটা এখনো আমাদের অনুপ্রাণিত করে। পণ্ডিত দীনদয়াল এমন একজন ব্যক্তি যিনি একাত্ম মানব বাদের প্রণেতা। ভারতের কৃষ্টি সংস্কৃতি পরম্পরা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন তিনি। মানুষের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা থেকেই একাত্ম মানব বাদের দৃষ্টিভঙ্গি শুরু করেছেন তিনি। প্রকৃতি থেকে অনেক কিছু শেখার কথা বলেছেন তিনি।

আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, পণ্ডিত দীনদয়াল বলেছেন সততা আমাদের নীতি হতে হবে। সততা নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেছেন সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস। যেটা এখন বলছেন যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি সমস্ত উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পৌঁছানোর কথা বলেছিলেন পণ্ডিত দীনদয়াল। যেটা এখন রূপায়ণ করছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। আর আমরাও সেই দিশায় কাজ করছি। সরকারের সুযোগ সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দুই পর্যায়ে প্রতি ঘরে সুশাসন কার্যক্রম করা হয়েছে।

জনসাধারণের কল্যাণে ‘আমার সরকার’ নামে একটা ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে। মূলত, সাধারণ মানুষের নিত্য দিনের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এই পোর্টাল খোলা হয়েছে। কেউ এই পোর্টালে অভিযোগ জানালে নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়। গ্রামীণ এলাকার মানুষ এরফলে উপকৃত হচ্ছেন। আর সেটাই চেয়েছিলেন পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়।

বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার যেটা বলে, সেটা করে দেখায়। এতে মানুষের আস্থা আমাদের উপর বাড়বে। এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস এসেছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী আমাদের রাজ্যে এসেছেন এবং মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে পুজো দিয়ে নতুন পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সৌন্দর্যায়নের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রয়াসে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন জিএসটি হার সারা দেশে কার্যকর হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পণ্য সামগ্রীর দাম কমে যাওয়ায় খুশি সকলেই। ডাঃ সাহা বলেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও পণ্ডিত দীন দয়ালের চিন্তাভাবনাকে মাথায় রেখে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, স্টেট জিএসডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য। নীতি আয়োগের ঘোষণায় ত্রিপুরা এখন ফ্রন্ট রানার স্টেট হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় দেশের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে নিচের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। বিভিন্ন প্যারামিটারে এগিয়ে যাচ্ছে রাজ্য।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, পশ্চিম জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিত শীল, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *