আগরতলা।। ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ব্যবসা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। বিগত দুই অর্থবছরের তুলনায় এই হার বেড়েছে প্রায় ১৩.৬০ শতাংশ।
আজ ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সামগ্রিক সাফল্যের বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সত্যেন্দ সিং এ সংবাদ জানান। তিনি জানান, রাজ্যে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ১৫০টি শাখা ও ১২টি ক্ষুদ্র শাখা ও ২টি মোবাইল এটিএম ভ্যান রয়েছে। এরমধ্যে ১টি মোবাইল এটিএম ভ্যান ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ উদ্বোধন করেছিলেন। ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ৩৯টি এটিএম রয়েছে। এরমধ্যে ২৫টি এটিএম রয়েছে গ্রামীণ এলাকায়।
তিনি বলেন, ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রাজ্যবাসীর নিজস্ব ব্যাঙ্ক। তিনি বলেন, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই ব্যাঙ্কের নেট মুনাফা হয়েছিল ২৭ কোটি টাকা। যা গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি টাকাতে। তিনি বলেন, যেকোন ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নন পারফর্মিং অ্যাসেট (এনপিএ)। এই ব্যাঙ্কের এনপিএ হচ্ছে শূণ্য। এতে বুঝা যায় ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের অ্যাসেট কোয়ালিটি খুবই ভাল। তিনি বলেন, ত্রিপুরার গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছে। এই ব্যাঙ্কের অধীনে বহু স্বসহায়ক দল রয়েছে। স্বসহায়ক দলগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরে কৃষিভিত্তিক সেক্টরে অনেক পরিমাণে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে গাভী পালন, শুকর পালন, হাঁস পালন, চাষাবাদ, পোল্ট্রি মোরগ পালন প্রভৃতি। গত অর্থবছরে এই ব্যাঙ্ক ১২ হাজার ৪৮টি স্বসহায়ক দলকে লোন দেয়। তিনি বলেন, আমাদের সবসময় প্রচেষ্টা থাকে গ্রামীণ অর্থনীতির সাথে সাথে বিভিন্ন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সহ শহরে যে এমএসএমই আছে, খুচরো দোকান আছে, স্ব উদ্যোগী আছেন তাদের সহায়তা করার।
তিনি বলেন, গত অর্থবছরে স্বাবলম্বন, প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প, পিএম স্বনিধি, পিএম সূর্যঘর মুফৎ বিজলী যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বীমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনা, অটল পেনশন যোজনা প্রভৃতি প্রকল্পে যুবক-যুবতীদের ঋণ দেওয়া হয়েছে। গত দু’টি অর্থবছরে ২টি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য লোন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কে কোন ধরণের ডিজিট্যাল ফ্যাসিলিটি পাওয়া যেতনা। বর্তমানে এই ব্যাঙ্কে ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং, মোবাইল ব্যাঙ্কিং, ইউপিআই, হোয়াটস্ অ্যাপ ব্যাঙ্কিং, এইপিএস, সেলফ আপডেট প্রিন্টিং মেশিন, চেক ক্লিয়ারিং ইত্যাদি সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, ফিঙ্গার টিপ-এর মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট চালু করা হয়েছে। এজন্য প্রত্যেক আধিকারিক ও কর্মচারীগণকে এই নতুন প্রযুক্তির বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অটল পেনশন যোজনায় এই ব্যাঙ্ক বেশ কয়েকবার ১ম ও ২য় স্থান দখল করেছে। গত অর্থবছরের সরস মেলায় এই ব্যাঙ্ক বেষ্ট ডিপার্টমেন্টাল ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতবর্ষে ২৮টি রিজিওন্যাল রুর্যাল ব্যাঙ্ক রয়েছে। তারমধ্যে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক একটা ভাল পজিশনে রয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ২৮টি শাখার পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রচেষ্টা নেওয়া হবে। অদূর ভবিষ্যতে এই ব্যাঙ্ক দেশের অর্থনীতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের জেনারেল ম্যানেজার অনুপ কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন।