আগরতলা।।ছাত্র জীবন থেকেই সমাজ সেবার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। দেশপ্রেমের ভাবনা আমাদের মধ্যে সবসময় থাকতে হবে। একে অপরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধের ভাবনা এবং একতা থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও যুব শক্তির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।

আজ আগরতলার নজরুল কলাক্ষেত্রে আয়োজিত নর্থ ইস্ট এনএসএস ফেস্টিভ্যাল – ২০২৫ এর উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, নর্থ ইস্ট এনএসএস ফেস্টিভ্যালে উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অংশগ্রহণকারীদের ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই। আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুবই খুশি। এখানে এসে মনে হচ্ছে যে পুরো উত্তর পূর্বাঞ্চল নজরুল কলাক্ষেত্রে হাজির হয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চল আগে সবসময় উপেক্ষিত ছিল।

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে চেষ্টা করেছিলেন। এরপর ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিকাশে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। যে কাজ পূর্বতন কোন সরকার করেনি। উত্তর পূর্বের উন্নয়নে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বে হিরা মডেল দিয়েছেন তিনি। হিরা মানে ন্যাশনাল হাইওয়ে, ইন্টারনেট, রেলওয়ে, এয়ারওয়ে। এখন ত্রিপুরা, মণিপুর সহ উত্তর পূর্বের বিভিন্ন জায়গায় রেল যোগাযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে। আমাদের রাজ্যে আগে একটা মাত্র জাতীয় সড়ক ছিল। সেই জায়গায় এখন ৬টি জাতীয় সড়ক হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনকার ছেলেমেয়েরাই আগামীদিনে দেশের ভবিষ্যত। কাজেই তাদের যথাযথ শিক্ষা প্রদানে শিক্ষকদেরও বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও ছেলেমেয়েদের ভালো পরামর্শ দিতে হবে। শিক্ষা এমন একটা বিষয় যা সেতু হিসেবে কাজ করে। ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার সময়ে চাপমুক্ত রাখতে পরীক্ষা পে চর্চা কার্যক্রম শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এমন একজন প্রধানমন্ত্রী আমরা আগে কখনো দেখিনি। শুধু পুঁথিগত শিক্ষা নয়, ছেলেমেয়েদের মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য যথাযথ শিক্ষা খুবই প্রয়োজন। এনএসএস বহুদিন ধরে যুব শক্তির বিকাশে কাজ করে চলছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে অষ্টলক্ষী নাম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলে জিএসডিপি বাড়ছে।

বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ এবং একতা থাকতে হবে। সবাইকে একে অপরের জন্য বাঁচতে হবে। একে অপরকে সাহায্য করতে হবে। সেবার মানসিকতা থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে আমরা জন্মেছি অপরের জন্য। এই ভাবনা থাকলেই সমাজে পরিবর্তন সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় যুবদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আমাদের নিজ নিজ রাজ্যকে আত্মনির্ভর করতে হবে। তবেই আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা সম্ভব।

ডাঃ সাহা বলেন, আজকে শুরু হওয়া এই ফেস্টিভ্যাল ৫ দিন ধরে চলবে। এর মাধ্যমে আমরা একে অপরের সম্পর্কে জানবো, বুঝবো। পরস্পরের সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত হবো। এর মধ্য দিয়ে বন্ধুত্বের বন্ধনও সুদৃঢ় হবে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় সরকারের উপ সচিব রাজীব কুমার সিং, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা এল ডার্লং, স্টেট এনএসএস অফিসার প্রবাল কান্তি দেব উত্তর পূর্বাঞ্চলের আধিকারিক সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *