আগরতলা, ৪ সেপ্টেম্বর: খেলাধূলা ও সংস্কৃতি সুস্থ সমাজ গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্রীড়াক্ষেত্রে পরিকাঠামোর আরো উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা থেকে সাফল্য নিয়ে আসছে ত্রিপুরার ছেলেমেয়েরা।
আজ আগরতলার এনএসআরসিসি ইন্ডোর হলে আয়োজিত ইয়োনেক্স সানরাইজ নর্থ ইস্ট জোন ইন্টার স্টেট এন্ড জোনাল ব্যাডমিন্টনশিপ ২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজ ত্রিপুরার জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এই আসর আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি থেকে দুই শতাধিক খেলোয়াড় ও অফিসিয়াল অংশগ্রহণ করেছেন। আমি তাদের সকলকে স্বাগত জানাই। খেলাধুলার মধ্যে সেই শক্তি আছে যা মানুষকে একত্রিত করে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শারীরিক সুস্থতাই মানসিক বিকাশের অন্যতম অবলম্বন। খেলাধূলার মধ্যেই মানুষ খুঁজে পায় জীবন বিকাশের পথ ও দুর্জয় মনোভাব। আর বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম খেলাধূলা। ছোটবেলা থেকেই খেলাধূলা ও আনন্দময় পরিবেশের সংস্পর্শে বেড়ে উঠলে শিশুর মন উচ্ছ্বল ও আনন্দমুখর হয়। দেহ ও মনের সতেজতা বৃদ্ধিতে খেলাধূলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলা দেশ ও জাতির জন্য একান্তভাবে প্রয়োজন। কারণ খেলাধূলার মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যবসায়, দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ এবং দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। রাজ্যে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে, তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খেলাধূলা ও সংস্কৃতি সুস্থ সমাজ গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তরুণ-যুবাদের খেলারমাঠে নিয়ে আসার জন্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন সহ নানাবিধ বিষয়ে উৎসাহিত করছেন। এজন্য তিনি খেলো ইন্ডিয়া ঘোষণা করেছেন। গত ৬/৭ বছরের সময়কালে রাজ্যে ক্রীড়াক্ষেত্রে ব্যাপক সংখ্যক পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে এবং আরো অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর ফলে ইতিমধ্যেই আমাদের ছেলেমেয়েরা জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতা থেকে সাফল্য নিয়ে আসছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি ত্রিপুরা রাজ্যে ৮টি সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠ তৈরী করা হয়েছে । আর একটি মাঠের কাজ চলছে। ১টি সিন্থেটিক হকি মাঠ এবং ১টি সুইমিং পুলের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্যে ২টি সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক ট্র্যাক এর কাজ যথাক্রমে পানিসাগর এবং বাধারঘাটে সম্পন্ন হয়েছে। এবারের বাজেটেও যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ রাখা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কৈলাসহর ও উদয়পুরে দু’টি মাল্টিপারপাস স্পোর্টস ইন্ডোর হল নির্মাণ করা হবে।
বাধারঘাটে দশরথ দেব স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট স্পোর্টস হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। এই সময়কালে আরও ৫০টি ওপেন জিমন্যাশিয়াম স্থাপন করা হবে বিভিন্ন স্থানে। ডাঃ সাহা আরো জানান, আগরতলার ভোলাগিরিতে গ্যালারি, আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং পুল, প্রাকৃতিক ফুটবল মাঠ, মাল্টিপারপাস স্পোর্টস হলের সুবিধাসম্পন্ন ক্রীড়া পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এছাড়া এই টুর্নামেন্ট শেষে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় থাকা পর্যটন কেন্দ্রগুলি ঘুরে দেখার জন্য উত্তর পূর্বের রাজ্য থেকে আসা খেলোয়াড় ও অফিসিয়ালদের আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী পর্বে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, মণিপুর রাজ্য ব্যাডমিন্টন এসোসিয়েশনের সভাপতি তথা বিধায়ক বিশ্বজিৎ সিং, পুর নিগমের সেন্ট্রাল জোনের চেয়ারম্যান রত্না দত্ত, পদ্মশ্রী জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার, ত্রিপুরা স্পোর্টস কাউন্সিলের সচিব সুকান্ত ঘোষ, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, অধিকর্তা এল ডার্লং, ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন এসোসিয়েশনের সভাপতি রতন সাহা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধি ও আধিকারিকগণ।