আগরতলা: ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আজ হুশিয়ারির সঙ্গে বলেছেন যে ত্রিপুরার সুনাম নষ্ট করার জন্য একটা অংশ অশান্তি সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। কারণ তারা ধীরে ধীরে পায়ের নিচে তাদের জমি হারিয়ে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপির জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা এখানে কী চলছে সেটা পর্যবেক্ষণ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ সাহা জানান, অপরাধীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
আজ ভারতীয় জনতা পার্টির চড়িলাম মন্ডলের উদ্যোগে সুতারমুড়া বাজারে আয়োজিত এক যোগদান সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেন যে আর কতদিন তারা এধরণের গুন্ডামি চালিয়ে যাবে।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, সাধারণ মানুষ উশৃঙ্খলতা, গুন্ডামি মেনে নেবে না। আমরা ত্রিপুরায় শান্তি চাই। ভারতবর্ষে ত্রিপুরা একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্য হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কিছু লোক অশান্তি সৃষ্টি করে ত্রিপুরার নাম বদনাম করার জন্য তৎপর রয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা কিভাবে বিনষ্ট করা যায় সেই চেষ্টা করছে তারা। তারা ধীরে ধীরে পায়ের নিচে তাদের জমি হারাচ্ছে। কিছু লোক বলছে ২০২৩ নির্বাচনে যদি আমরা বিভিন্ন জায়গায় আমাদের পার্টি থেকে লোক না দিতাম তবে এই সরকার হতো না।
তাই আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই ২০১৮ নির্বাচনে আপনারা কোথায় ছিলেন? তখন তো আপনাদের দেখা যায় নি! তখন কি করে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার ত্রিপুরায় গঠিত হয়েছে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশীর্বাদে সেটা সম্ভব হয়েছে। মোদি আছেন বলে সবকিছু সম্ভব। মোদি এবং বিজেপির জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও সবকিছু দেখছেন। অপরাধীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং আমি তাদের সতর্ক করতে চাই। মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করবেন না। আমি মানুষের কাছে বিজেপিতে যোগদানের আহ্বান জানাই। কারণ কিছু মানুষ ভুল দিশায় যাচ্ছে। কিছু স্বার্থান্বেষী অংশের জন্য জনজাতি অংশের মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।
বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে, জনজাতিদের জন্য একটি পৃথক দপ্তর খোলা হয়েছিল এবং এখন প্রধানমন্ত্রী মোদি এর জন্য কাজ করছেন। আমরাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশ অনুসরণ করে কাজ করছি। আমরা অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি এবং জনজাতিদের জন্য তহবিল সরবরাহ করছি। বিজেপি সব জায়গায় যাবে, কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। সিপিএম-এর সমর্থনপুষ্ট কিছু মানুষ স্থানীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে সমস্যা তৈরি করছে। ২০২১ সালের এডিসি নির্বাচনের সময়, বিজেপি কার্যকর্তাগণ আক্রমণের মুখে পড়েছিল। কিন্তু এখন আর সেরকম সুযোগ নেই। আমরা আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেব। আমরা এই ধরনের রাজনীতিকে সমর্থন করি না। কারণ মানুষ শান্তি চায়।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলিকে আরও সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে সিপিএম সমর্থিত দুষ্কৃতিরা স্থানীয় পার্টিতে যোগদান করে অশান্তি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। তিনি বলেন, আমরা জোটের নিয়ম বজায় রাখছি। আমরা এডিসির জন্য প্রচুর পরিমাণে তহবিল দিচ্ছি। সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিয়ে কেউ ঐক্য তৈরি করতে পারে না। কিংবা পেশীশক্তি দিয়ে সবকিছু অর্জন করতে পারে না। তাই যে শক্তির প্রয়োজনই হোক না কেন, আমরা শান্তি বজায় রাখার জন্য সেটা ব্যবহার করবো।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক বিপিন দেববর্মা, প্রদেশ সম্পাদক ডেভিড দেববর্মা, যুব মোর্চার প্রদেশ নেতা নবাদল বণিক, সিপাহীজলা জেলার জেলাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, সিপাহীজলা জেলা উত্তরের সভাপতি বিপ্লব চক্রবর্তী, মন্ডল সভাপতি তাপস দাস, জনজাতি মোর্চার জেলা সভাপতি সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
