দিল্লি।।অপারেশন সিঁদুর’ এখনও শেষ হয়নি। ইসলামাবাদের অনুরোধে সাময়িক ভাবে স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘‘ভারতীয় সেনার হাতে প্রচণ্ড মার খেয়ে গোটা বিশ্বে আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান। ১০ মে পাক সেনার ডিজিএমও ভারতীয় ডিজিএমও-কে ফোন করে বলেন, ‘‘আর সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা এবং সেনা তৎপরতা দেখা যাবে না। এর পর ভারত বিষয়টি (সংঘর্ষবিরতি) বিবেচনা করেছে।
২২ এপ্রিলের পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জবাবে গত ৬ মে রাতে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। তার পর এই প্রথমবার প্রকাশ্যে বক্তৃতা করলেন মোদী। বুদ্ধপূর্ণিমায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘এই যুগ যুদ্ধের নয়। কিন্তু এই যুগ সন্ত্রাসেরও নয়। সন্ত্রাস এবং আলোচনা এক সঙ্গে হতে পারে না। সন্ত্রাস এবং বাণিজ্য এক সঙ্গে চলতে পারে না। রক্ত এবং জল এক সঙ্গে বইতে পারে না।’’ এ ক্ষেত্রে ‘জল’ প্রসঙ্গ তুলে তিনি কৌশলে সিন্ধু চুক্তি নিয়ে ভারতের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন বলেই মনে করছেন অনেকে।মোদীর দাবি, রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের (‘স্টেট স্পনসর্ড টেররিজ়ম’) বড় উদাহরণ পহেলগাঁও কাণ্ড। প্রত্যেকটি যুদ্ধের ময়দানে আমরা পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করেছি। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এও আমরা সেই শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছি। পাক পঞ্জাবের মুরিদকেতে লশকর-এ-ত্যায়বার সদর দফতর মার্কাজ ত্যায়বা এবং বহওয়ালপুরে মার্কাজ শুভান আল্লায় জইশ-এ-মহম্মদের প্রধান ঘাঁটিকে ‘সন্ত্রাসের বিশ্ববিদ্যালয়’ বলে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, ‘‘৯/১১, ব্রিটেনের মেট্রোয় বিস্ফোরণ (৭/৭) থেকে ২৬/১১, সবক’টি সন্ত্রাসেই পাকিস্তানের ওই জায়গাগুলির যোগ রয়েছে। আমরা সন্ত্রাসের সেই সদর দফতর চুরমার করে দিয়েছি।
পহেলগাঁও সন্ত্রাসের জবাবে ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরের পরে পাকিস্তান ঘাবড়ে গিয়েছে বলে দাবি করে মোদী বলেন, ‘‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শামিল না হয়ে ওরা ভারতের উপর হামলা চালিয়েছে। আমাদের স্কুল-কলেজ, মন্দির-গুরুদ্বার, সাধারণ নাগরিকের বাড়িঘরকে নিশানা করেছে পাকিস্তান। সেখানেও ওরা ব্যর্থ হয়েছে। দুনিয়া দেখল কী ভাবে পাকিস্তানের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের কাছে ধুলিসাৎ হয়েছে। আকাশেই নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তিন দিনে পাকিস্তানকে যা করা হয়েছে, যা ওরা ভাবতেই পারেনি। তাই ওরা বাঁচার রাস্তা খুঁজেছে। দেশে দেশে ঘুরেছে।’’আমাদের সেনাবাহিনী সর্বদা সতর্ক। আকাশ, জল থেকে মাটি- সর্বত্র আমরা প্রস্তুত থেকেছি। ‘নতুন নর্মাল’ তৈরি করেছে সেনা। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আবার জবাব দেওয়া হবে। কোনও ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’ (পরমাণু হুমকি) ভারত সহ্য করবে না।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, সংঘাত বন্ধ করার জন্য তিনি ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশকেই চাপ দিয়েছিলেন। অন্যথায় আন্তর্জাতিক ব্যবসার উপর প্রভাব পড়বে বলেও দুই দেশকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। ভারত-পাক সংঘাত ‘দ্বিপাক্ষিক বিষয়’ বলে চিহ্নিত করলেও সরাসরি ট্রাম্পের মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি মোদী।