নিজস্ব প্রতিনিধি জনদর্পন : বুধবার আগরতলায় অনুষ্ঠিত হল ২য় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব। রাজধানীর বেসরকারী হোটেলে আয়োজিত এই উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড: হাছান মাহমুদ, এমপি, ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বাংলাদেশের কক্সবাজার -৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মানিকগঞ্জ - ২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মকবুল হোসেন, আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারি হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ প্রমুখ। এছাড়াও শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়িকা অপু বিশ্বাস এবং নায়ক ফেরদৌস, বাউল ফকির সাব উদ্দিন প্রমুখ। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড: হাছান মাহমুদ বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথমেই ৭১সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত এবং বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের অবদানের কথা আর একবার স্মরণ করে বলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখ লাখ শরণার্থী এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ত্রিপুরাবাসী তাদেরকে বুঝা বলে মনে করেননি বরং হাসিমুখে সহায়তা করেছেন। আমরা দুই দেশের বাসিন্দা হলেও একই বাসায় কথা বলি একই গান শুনি একই খাবার খাই। এই মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে। এই চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্য দিয়ে মধুর সম্পর্কের নৈকট্য তা আরো মজবুত হবে। এই মৈত্রী দুই দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রাখছে। সড়ক পথ, রেলপথ
সেইক্ষেত্রে যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সৃষ্টি হবে সেটি ত্রিপুরা নয় শুধু ভারত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সেই সঙ্গে তিনি আশা ব্যক্ত করেন আগামী দিনে আরও বড় পরিসরে চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে সুসম্পর্ক থাকা সবচাইতে বড় বিষয়। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার ভারত সহায়তা করে ওই অঞ্চলের স্থায়িত্ব এবং মানুষের অধিকারকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেছে, এটা আমাদের দায়িত্ব। মানবিক দিকে ভারতের দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ালো আর ভারত সেটাই করেছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আর্থিক দিক সামাজিক সাংস্কৃতিক দিকে এক নতুন দিশা দেখিয়েছে। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি বঙ্গবন্ধু সুযোগ্য কন্যা। শেখ হাসিনার কারণে জি ডি পি রেটে বাংলাদেশ গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়েছে। তেমনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চা বিক্রি দিয়ে শুরু করেছেন এখন ১৩০কোটি ভারতবাসীর চৌকিদারি করছেন।
আজ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রচেষ্টায় উত্তর-পূর্বের জন্য অর্থনৈতির নতুন দুয়ার খুলেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবহারের জন্য চুক্তি হয়েছে, ভারত বাংলা মৈত্রী সেতু হয়ে গেছে এবং এর মধ্য দিয়ে পুরো উত্তর-পূর্বের করিডর হতে চলেছে ত্রিপুরা। এতে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশও।
বিপ্লব কুমার দেব এদিন আর বলেন এখনো ষড়যন্ত্রকারীরা কায়েম রয়েছে দুই দেশের মধ্যে, কিন্তু নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনার সামনে টিকতে পারেনি এবং আগামীদিনেও তারা কিছু করতে পারবে না। তিনি বলেন ভারতের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর খুলে গেলে বাংলাদেশের মানুষ আর্থিক রোজগার পাবে আর উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষের আর্থিক বিকাশ তরান্নিত হবে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যদি বিশ্বের কোথাও জিজ্ঞেস করা হয় সবচাইতে ভারতের বেশি আত্মিক সম্পর্কের দেশ কোনটা ? তখন তিনি এটাই বলবেন সবচাইতে বেশি মানসিক ও আত্মিক সম্পর্ক যদি কারোর সাথে আছে সেটা সর্বশ্রেষ্ঠ পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশের সাথে আছে ভারতের। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের স্বাগত জানান ত্রিপুরায় এসে বিনিয়োগ করার জন্য। এখন ত্রিপুরায় ন্যূনতম কুড়ি হাজার কোটি রুপির পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে আর রেলপথে ন্যূনতম ৫০ হাজার কোটি রুপির বিনিয়োগ হবে। তাই এক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের একটা বিরাট সুযোগ রয়েছে ত্রিপুরায় বলেও অভিমত ব্যাক্ত করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।