আগরতলা: মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের চিন্তাভাবনা আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক। উনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিক্ষনীয় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার মহারাজাদের সম্মান প্রদর্শনে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। আজ সকালে আগরতলার কামান চৌমুহনীর জিরো পয়েন্টে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের আবক্ষ মূর্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর একজন স্বপ্নদ্রষ্টা ব্যক্তি ছিলেন। উনার চিন্তাভাবনা আজকের দিনেও সমান প্রাসঙ্গিক। আধুনিক ত্রিপুরার রূপকার বলা হতো তাঁকে। বর্তমান ত্রিপুরার উন্নয়নের ক্ষেত্রে উনার যে চিন্তাভাবনা বা স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাকে এখন বাস্তবায়ন করছে ত্রিপুরা সরকার। বিদ্যাপীঠ নিয়ে খুব চিন্তাভাবনা করতেন তিনি। পড়াশুনার ক্ষেত্রে একটি গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা চিন্তা করেছিলেন তিনি। সেটাকে সামনে রেখে তিনি চেয়েছিলেন এখানে একটা মেডিকেল কলেজ হোক, জেনারেল কলেজ হোক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হোক। আর সেটাকে বাস্তবায়িত করছে রাজ্যের বর্তমান সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি আগের সরকার কিংবা যেকোন দল মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর সম্পর্কে কোন উচ্চবাচ্য করেনি। উনি ত্রিপুরার জন্য যা কাজ করে গেছেন সেটা যাতে মানুষ জানতে না পারে তারও ব্যবস্থা তারা করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসার পর এবং আমাদের সরকার ২০১৮তে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আমরা মহরাজাদের সম্মান প্রদর্শনের উদ্যোগ নিয়েছি। আজ মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী। এজন্য আমরা তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করছি। আমি সমস্ত ত্রিপুরাবাসীকে বলবো উনার কীর্তি এবং ত্রিপুরার জন্য তিনি যা করে গেছেন সে সম্পর্কে অবগত করতে হবে। তিনি ছিলেন ত্রিপুরার শেষ মহারাজা। এরআগে বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুর, রাধাকিশোর মানিক্য বাহাদুর, বীরেন্দ্র কিশোর মানিক্য বাহাদুরের শাসন কাল ছিল রাজ্যে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ত্রিপুরাকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর। ১৯৪২ সালে ত্রিপুরায় সিঙ্গারবিলে এয়ারপোর্ট স্থাপন করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন। সেসব দেশে গিয়ে সেই দেশের প্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। আধুনিক শহর গড়ে তোলার অভিজ্ঞতা নিয়ে রাজ্যে ফিরেই সেভাবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। জাতি জনজাতি সকলকে একসাথে নিয়ে চলার জন্য গুরুত্ব দিয়েছিলেন। দাঙ্গা পীড়িত মানুষের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি। হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত হয়েও বেনুবন বিহার বুদ্ধ মন্দির স্থাপন করেছিলেন তিনি। সব ধর্মের প্রতি সমান আস্থা ছিল তাঁর। উনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে।
আজ মহারাজার জন্মবার্ষিকীতে আমি সমস্ত ত্রিপুরাবাসীকে হার্দিক অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানাই। এই কার্যক্রমে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, পুর নিগমের কর্পোরেটর রত্না দত্ত সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।