আগরতলা ।।রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, আধা সামরিক বাহিনী, যেকোন ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে গঠিত বিভিন্ন বাহিনীর সম্মিলিত প্রয়াসে আগরতলায় বিপর্যয় মোকাবিলার বিষয়ে মহড়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
শান্তিপূর্ণভাবে এই মহড়া সম্পন্ন হওয়ায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মহড়া সম্পন্ন হওয়ার পর উমাকান্ত মাঠে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক বলেন, খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে এই মহড়া সম্পন্ন করা হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এই মহড়া সম্পন্ন করতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সবাই যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তা মনে রাখার মতো।
তিনি জানান, উমাকান্ত একাডেমিতে আজ দুটি পর্যায়ে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্যায়ের মহড়া বিকাল ৪টা থেকে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের মহড়া বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু হয়। এতে ১৭টি বিভিন্ন দপ্তর, বিভিন্ন আধা সামরিক বাহিনীর আধিকারিকগণ অংশ নেন। এছাড়া সাধারণ মানুষও এই মহড়ায় অংশ নেন। জেলাশাসক জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও এই মহড়ায় সামিল ছিলেন। তিনি জানান, এই মহড়া পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন এজেন্সির মধ্যে যে সমন্বয় দেখা গিয়েছে তা প্রশংসার যোগ্য। তিনি বলেন, যেকোন ধরণের বিপর্যয় সৃষ্টি হলে তা থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করার জন্য প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার কে, পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক সজল বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলাশাসক মেঘা জৈন সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, সারা দেশ তথা রাজ্যের সাথে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায়ও আজ অসামরিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক মহড়া উমাকান্ত একাডেমীর মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করে ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার, জেলাস্তরের বিভিন্ন আধিকারিকগণ, সিভিল ডিফেন্স, ওয়ার্ডেনস, স্বেচ্ছাসেবক, হোমগার্ড কর্মীগণ, এনসিসি, এনওয়াইকেএস, বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ এবং স্বাস্থ্যকর্মীগণ। যেকোন পরিস্থিতিতে কিভাবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে এবং পরিস্থিতির মোকাবিলা কিভাবে করতে হবে এসব বিষয়ে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। উমাকান্ত মাঠে কৃত্তিম বোম্ব ব্লাস্টের পর উদ্ধারকার্য চালানো হয় জরুরী ভিত্তিতে। মানুষকে বোম্ব ব্লাস্টের স্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত, নিহতদের জিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই মহড়ায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. বিশাল কুমারও অতিরিক্ত জেলাশাসক মেঘা জৈন সহ পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া নগরোন্নয়ন দপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, স্বাস্থ্য, সদর মহকুমা প্রশাসন ইত্যাদি দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।উদয়পুর: সারা রাজ্যের সঙ্গে গোমতী জেলায়ও আজ সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হয়। গোমতী জেলার জেলাশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলার মহকুমা শাসকের কার্যালয়, পুলিশ আধিকারিকের কার্যালয়, ওটিপিসি, মহারাণীস্থিত বিএসএফ ক্যাম্প সহ ২০টি স্থানে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার, টিএসআর, পুলিশ সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করে।
জরুরি ও দুর্যোগ পরিস্থিতিতে নিজেদের সচেতন ও সুরক্ষিত রাখার জন্য এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে উদয়পুর মহকুমার মহকুমা শাসকের কক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা। তিনি জানান, আপদকালীন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের প্রস্তুতি, বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়, উদ্ধারকার্য, জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি কাজকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্যই এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে গোমতী জেলার পুলিশ সুপার নমিত পাঠক, অতিরিক্ত জেলাশাসক জয়ন্ত ভট্টাচার্য, উদয়পুর মহকুমার মহকুমা শাসক ত্রিদীপ সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।খোয়াই; সারা রাজ্যের সঙ্গে খোয়াই জেলাতেও আজ সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হয়। খোয়াইতে জেলাশাসকের অফিস, খোয়াই জেলা হাসপাতাল, সুভাষ পার্কে কহিনুর কমপ্লেক্সে আয়োজিত মহড়ায় সিভিল ডিফেন্স, আপদামিত্র, এনএসএস, স্কাউট এন্ড গাইডস, আরক্ষা, বিদ্যুৎ, অগ্নিনির্বাপক, টিএসআর, বিএসএফ, বোম্ব স্কোয়ার সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীগণ অংশ নেন। বিকাল ৪টায় সাইরেন বাজানোর পর মহড়ার কাজ শুরু হয়। মহড়ার পর জেলাশাসক রজত পন্থ, অতিরিক্ত জেলাশাসক অভিজিৎ চক্রবর্তী, খোয়াই মহকুমার মহকুমা শাসক চারু ভার্মা সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ মহড়ার স্থানগুলি পরিদর্শন করেন।সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক রজত পন্থ জানান, খোয়াই জেলার অন্তর্গত তেলিয়ামুড়া, চাকমাঘাট ব্যারেজ, তেলিয়ামুড়া বাজার, বড়মুড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মুঙ্গিয়াকামী রেল স্টেশন, তেলিয়ামুড়া হাসপাতাল, কল্যাণপুর ব্লক এবং কল্যাণপুর বাজারেও মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।কৈলাসহর: কৈলাসহরের নেতাজী কর্ণার ও বিদ্যানগর এইচএস স্কুল মাঠে সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হয়। মহড়ায় আপদামিত্র, এনসিসি, পুলিশ, টিএসআর, বিএসএফ, ২৮ ব্যাটেলিয়ান আসাম রাইফেলস, অগ্নিনির্বাপক, মেডিক্যালটিম, বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীগণ অংশগ্রহণ করেন। কুমারঘাটে সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হয় বিমল সিনহা শপিং কমপ্লেক্স এবং ৩৩/১১ কেভি পাওয়ার স্টেশনে মহড়ায় নেতৃত্ব দেন মহকুমা শাসক এন এস চাকমা ও এসডিপিও কমল দেববর্মা। মহড়ায় সিভিল ডিফেন্স, আপদামিত্র, পুলিশ, টিএসআর, আসাম রাইফেলস, অগ্নিনির্বাপক সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা অংশ নেন।ধর্মনগর: ধর্মনগরে আজ সিভিল ডিফেন্স মহড়া অনুষ্ঠিত হয় বিবিআই স্কুলে। বিকাল ৪টায় শুরু হয় মহড়ার কাজ। মহড়ায় ইন্সিডেন্ট কমান্ডার হিসেবে ছিলেন ধর্মনগর মহকুমার মহকুমা শাসক সজল দেবনাথ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন উত্তর ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক চাদনী চন্দ্রন। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক জানান, মহড়ায় ৩৯১ জন অংশ নিয়েছেন। সাংবদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত জেলাশাসক বিপ্লব দাস, অতিরিক্ত জেলাশাসক এল দার্লং, মহকুমা শাসকসজল দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন।শান্তিরবাজার: সারা দেশের সাথে আজ শান্তিরবাজার মহকুমায়ও অসামরিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক এক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিরবাজার মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে বিকেল ৪টায় শান্তিরবাজার পুর পরিষদ অফিস এবং শান্তিরবাজার বাজার প্রাঙ্গণে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহকুমা শাসক মনোজ কুমার সাহা, বিভিন্ন দপ্তরের মহকুমা স্তরের আধিকারিকগণ, সিভিল ডিফেন্সের কর্মীগণ, বিএসএফ, টিএসআর, আরক্ষা কর্মী, সেচ্ছাসেবক, এনসিসি, এনএসএস, স্বাস্থ্য কর্মীরা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এই মহড়ায় অংশ নেন। জরুরি পরিস্থিতিতে কিভাবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে এবং এই পরিস্থিতির মোকাবেলা কিভাবে করতে হবে সে বিষয়ে মহড়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এলার্ট সাইরেন বাজানোর পর পরই মহড়ার কাজ শুরু হয়ে যায়।মোহনপুর: মোহনপুর মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ সারা রাজ্যের সাথে মোহনপুরে সিভিল ডিফেন্স মকড্রিল অনুষ্ঠিত হয়। এই মহড়ার মুখ্য উদ্দেশ্য হল জরুরি এবং দুর্যোগ পরিস্থিতিতে নিজেদের সচেতন ও সুরক্ষিত রাখা।
মহড়াটি মোহনপুর পুর পরিষদ এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৪টায় মহড়া শুরু হয়। মহড়ায় সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার, আপদামিত্র, এনসিসি ক্যাডেট, টিএসআর জওয়ান, অগ্নিনির্বাপক, মেডিক্যাল টিম, বিদ্যুৎ দপ্তর অংশ নেন। মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর মহকুমার মহকুমা শাসক সুভাষ দত্ত, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সব্যসাচী দেবনাথ, মোহনপুর মহকুমার মহকুমা শাসক কার্যালয়ের ডিসিএমগণ সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ। মহড়ায় বিপর্যয় মোকাবিলা, প্রশাসনের ব্যবস্থাপনা, উদ্ধার কার্য, জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।কমলপুর: সারা দেশের সাথে আজ কমলপুর মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে এক অসামরিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। কমলপুর বাস স্ট্যান্ড, ফুলছড়ি বাজার এবং কমলপুর ইংরেজীমাধ্যম দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ে এই সচেতনতামূলক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। আপতকালীন ও জরুরি পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহকুমার বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক, কর্মী, সিভিল ডিফেন্স, আরক্ষা প্রশাসন, এনসিসি, বিএসএফ, টিএসআর, অগ্নি নির্বাপক দপ্তর, স্বাস্থ্য দপ্তর ও অন্যান্য দপ্তর এই মহড়ায় অংশ গ্রহণ করেন।জম্পুইজলা: জম্পুইজলা মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ সারা রাজ্যের সাথে জম্পুইজলা মহকুমার টাকারজলা বাজারে মকড্রিল অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ৪টায় মকড্রিল শুরু হয়। জরুরি ও দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কিভাবে আহত ব্যক্তিকে সেল্টার হাউজ, হাসপাতালে নিতে হবে তা আজ মকড্রিলের মাধ্যমে দেখানো হয়।
মকড্রিলে জম্পুইজলা আপদামিত্র, ৭ম ব্যাটেলিয়ানের দুর্যোগ মোকাবিলা দল, টাকারজলা অগ্নিনির্বাপক কার্যালয়ের কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী অংশগ্রহণ করেন। আজ মকড্রিলে উপস্থিত ছিলেন জম্পুইজলা মহকুমার মহকুমা শাসক চিরঞ্জীব আনন, জম্পুইজলা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক স্নেহাশিস কুমার দেব, জম্পুইজলা মহকুমার ডিসিএমগণ, জম্পুইজলা মহকুমার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী, ছাত্রছাত্রীরা ও শিক্ষকগণ।